তাপ প্রবাহের কারণে দেশে হিট এলার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ্য হয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে। জনবল সংকটের কারণে এতো বেশি রোগীর সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকসহ অন্যদের। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়া শিশু, বৃদ্ধদের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন আত্মীয়স্বজনসহ দর্শনার্থীরা। এতে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। দর্শনার্থীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে নিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় প্রত্যেক রোগীর সঙ্গে দর্শনার্থী হিসেবে অতিরিক্ত ৫ থেকে ৬ জন স্বজন ভিড় করে আছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, রমজানের ঈদের পরে দেশের অন্যান্য জেলার মতো শরীয়তপুরেও চলছে তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহের কারণে অসুস্থ্য হয়ে প্রতিদিন প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ জন রোগী নতুন করে ভর্তি হচ্ছেন। এছাড়াও বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রায় পাঁচ শতাধিক রোগী। হাসপাতালটিতে সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৯০০ রোগীকে সেবা প্রদান কার্যক্রম চলছে। অথচ হাসপাতালটির শয্যা সংখ্যা মাত্র ১০০ জনের। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিন গুণেরও অধিক রোগীকে সেবা প্রদান করতে একদিকে যেমন কষ্ট হয়ে পড়ছে চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের, অন্যদিকে প্রতিদিন প্রত্যেক রোগীর সঙ্গে ৫ থেকে ৬ জন দর্শনার্থী আসেন দেখা করতে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বেড়েছে চুরিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কার্যক্রম। বিষয়টি সামলাতে হাসপাতালের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট মইনুল ইসলাম হাসপাতালটিতে পরিদর্শনে আসেন। এসময় দেখা যায়, প্রত্যেক রোগীর সঙ্গে কমপক্ষে ৩ থেকে ৬ জন দর্শনার্থী রয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর শরীয়তপুর জেলা কমান্ড্যান্ট মইনুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসক আমাকে জানিয়েছেন হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে পরিদর্শনে এসে দেখলাম যত্রতত্র গাড়ি পাকিং করা, রোগীর সঙ্গে প্রয়োজনের অতিরিক্ত একাধিক দর্শনার্থী। এতে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হিমশিম খাওয়ারই কথা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে আনসার বাহিনীর সহযোগিতা চাইলে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাব, তারা ব্যবস্থা নেবেন।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত গরমে অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এতে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ বেশি রোগীকে সেবা দিতে হচ্ছে আমাদের। এমনিতেই একশ'র জায়গায় ৮০০ থেকে ৯০০ রোগীর সেবা করতে হচ্ছে, তার ওপর এসব দর্শনার্থীর কারণে আমাদের বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে।