প্রচন্ড দাবদাহে সোনালি আঁশ পাট ও ধান টিকিয়ে রাখতে অনবরত জমিতে সেচ দিচ্ছেন কৃষকরা। প্রখর তাপে সেচের পরে দুদিনেই শুকিয়ে যাচ্ছে ক্ষেত। তীব্র রোদ আর অসহনীয় গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় পাটের গাছ বাড়ছে না তেমন। অন্যদিকে যেসব ধানে ফুল আছে, এই রোদে সেসব ধানে চিটা হয়ে যাবে। তাই দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা।
ফরিদপুরের সালথায় প্রচন্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে সোনালি আঁশ পাটসহ জমির বিভিন্ন ফসল শুকিয়ে যাচ্ছে। কোথাও পানির অভাবে কৃষক ক্ষেতে সেচ দিতে পারছেন না। এতে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তা আর দুর্ভোগে কৃষকরা। শুধু পাট আবাদ নয়, বিভিন্ন জাতের সবজি চাষে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, পাট ও পেঁয়াজের জন্য বিখ্যাত ফরিদপুরের সালথা উপজেলা। চলতি মৌসুমে সালথায় এ পর্যন্ত ১২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৩৫০ হেক্টর। বেশ কয়েক দিন ধরে প্রচন্ড দাবদাহ ও রোদে জমির ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের পাটচাষি ইব্রাহিম মোল্যা ও দবির মোল্যা জানান, প্রচন্ড গরমে জমিতে সেচ দেওয়ার পরেও ফসলের ক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে। মাটিতে কোনো রস থাকছে না। সেচ দিতে খরচও বাড়ছে, আবার মাটি ভিজা থাকছে না। ঘন ঘন সেচ দিলেও পাটের গঠন কেমন জানি হলদে হয়ে যাচ্ছে। পাট বেড়ে উঠছে না।
সোনাপুর ইউনিয়নের চাষি নাছির মাতুব্বর জানান, তিনি প্রায় দুই একর জমিতে পাট চাষ করেছেন। প্রচন্ড রোদের কারণে পাট গাছগুলো আস্তে আস্তে হলুদ হয়ে যাচ্ছে। দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। কারণ দেনা হয়ে তিনি জমিতে সেচ দিচ্ছেন। এতে খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
আম চাষি বিলস্নাল হোসেন বলেন, রোদের তাপ বেশি হওয়ায় আম বাগানে আমের গুটি ঝরে পড়ছে। সেচ দিয়ে আমের গুটি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন, তার পরও ঝরে পড়ছে। বৃষ্টি হলে এমনটা হতো না।
চাষিরা জানান, প্রচন্ড তাপে জমির ফসল জমিতেই শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম। আর কয়েক দিন খরা-দাবদাহ অব্যাহত থাকলে তাদের জমির পাটসহ বিভিন্ন সবজি একেবারেই নষ্ট হয়ে যাবে।
সালথা উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সুদীপ বিশ্বাস জানান, এ বছর উপজেলায় ১২ হাজার ২শ' হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। কিন্তু দাবদাহে পাটগাছ শুকিয়ে না যায় সেজন্য প্রচুর পরিমাণ সেচ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষকদের। তবে বৃষ্টি হলে এসব পাটের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না। অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রেও সেচ দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।