বাসদের তিন দিনের রোডমার্চ শুরু
প্রকাশ | ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে তিন দিনব্যাপী রোডমার্চ শুরু করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে এই রোডমার্চ শুরু হয়। তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে এই রোর্ডমার্চের উদ্বোধন করেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ।
রোডমার্চের উদ্বোধন করে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশ আজ মরুকরণের হুমকির মুখে। উজানে একতরফা পানি সরিয়ে নেওয়ার ভারতীয় আগ্রাসী তৎপরতা, দেশের ভেতরে সরকারের নতজানু নীতি ও দখল-দুষণের ফলে এক সময়ের ১২০০ নদী আজ ২৩০ এ নেমে এসেছে এবং নদীর চেহারা খালে পরিণত হয়েছে। দেশের চতুর্থ বৃহত্তম নদী তিস্তায় এবারে শুষ্ক মৌসুম আসতে না আসতেই পানি প্রবাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে ৮০০ কিউসেকে নেমে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার বাংলাদেশ অংশে কমপক্ষে ১০ হাজার কিউসেক পানি থাকার কথা। তিস্তা ব্যারেজের বিভিন্ন ক্যানেলের মাধ্যমে ১ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে যে সেচ সুবিধা দেওয়া হতো তা কমতে কমতে বন্ধ হওয়ার পথে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে বিকল্প সেচ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শুধু তিস্তা নয় ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা ৫৪টি নদীর ৫১টিতে ভারত একতরফা বাঁধ দিয়ে সব আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে পানি প্রত্যাহার করছে। ফারাক্কা বাঁধের ভয়াবহ প্রতিক্রিয়ার কথা সবার জানা আছে। সুরমা-কুশিয়ারা তথা মেঘনা নদীর উজানে বরাক নদীর টিপাই মুখে বাঁধ দিয়ে ভারত জল বিদু্যৎ প্রকল্পের নামে কার্যত সুরমা-কুশিয়ারা তথা মেঘনা নদীকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের খড়্গ মাথায় ঝুলছে। ভারতের এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হলে নদীমাতৃক সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামলা বাংলাদেশ অনিবার্যভাবে মরুভূমির দেশে পরিণত হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারত একের পর এক নদীর পানি প্রত্যাহার করলেও বাংলাদেশের সরকার কোনো কার্যকর প্রতিবাদ করছে না। পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য আন্তর্জাতিকভাবেও সমাধানের কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
এ সময় তিনি জনগণকে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার আর সরকারের নতজানু নীতির প্রতিবাদে এবং তিস্তাসহ সব নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন নদী ও পানি গবেষক শেখ রোকন, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নিখিল দাস, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জুলফিকার আলী ও কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন।