শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বাল্যবিয়ের দায়ে মৌলভীকে জরিমানা

চান্দিনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিশ!

চান্দিনা (কুমিলস্না) প্রতিনিধি
  ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
চান্দিনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিশ!

কুমিলস্নার চান্দিনায় বাল্যবিয়ে পড়ানোর অপরাধে এক মৌলভীকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই ঘটনায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে তথ্যদাতা চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিশ বসান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানসহ মাতব্বররা। ভ্রাম্যমাণ আদালতকে তথ্য দেওয়ার অভিযোগ এনে আবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করার পর তিনি ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে করা হয় মারধর। এ ঘটনায় আহতাবস্থায় তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের প্রার্থনা করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আহতরা।

ঘটনাটি ঘটছে কুমিলস্নার চান্দিনা উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের সুহিলপুর গ্রামে। গত ১৪ এপ্রিল বাল্যবিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ভ্রাম্যমাণ আদালত ঘটনাস্থলে গিয়ে মৌলভীকে জরিমানা করে। ১৮ এপ্রিল ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার বিরুদ্ধে এলাকায় সালিশ বৈঠক হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ এপ্রিল ওই গ্রামের জনৈক জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে তার ১৬ বছরের ছেলের সঙ্গে আপন খালাতো বোনের (১৩) বিয়ে হয়। ওই গ্রামের মসজিদের ইমাম মৌলভী ইকবাল বারী হোসেন ওই বিয়ে পড়ান। খবর পেয়ে ইকবাল বারী নামের ওই মৌলভীকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাবের মো. সোয়াইব। ওই রায়ের বিরোধিতা করে গত বৃহস্পতিবার মৌলভী স্থানীয়ভাবে সালিশ দরবার আহ্বান করেন। ওই সালিশ দরবারে আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের তথ্যদাতা চিহ্নিত করে বৈঠক হয়। সুহিলপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন সরকারসহ গ্রাম্য মাতব্বর সাইফুল ইসলাম খোকনের নেতৃত্বে ওই সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সন্দেহভাজন তথ্যদাতা আবুল হোসেনকে ২০ হাজার টাকা ও বরের পিতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হয়। সন্দেহভাজন তথ্যদাতা জরিমানা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ও তার পক্ষের মো. হারুনুর রশিদ ও তার ছেলে মো. সুমন এবং বরের পিতা জয়নাল আবেদিনকে বেধরক মারধর করে সালিশ কর্তারা। এছাড়া তাদের ঘরবাড়িতেও হামলা চালানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় আহত হারুনুর রশিদের ছেলে নেছার উদ্দিন বাদী হয়ে শুক্রবার চান্দিনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

চান্দিনা থানার ওসি আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবেন। ইউএনও জাবের মো. সোয়াইব জানান, 'যিনি বাল্যবিয়ে পড়িয়েছেন তিনি নিবন্ধিত কাজী নন। সালিশের বিষয়টি আমি বৃহস্পতিবার রাতে শুনেছি। চান্দিনা থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে রাতেই নির্দেশনা দিয়েছি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে