সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আটঘরিয়ার হাট-বাজারগুলোতে অন্যায়, অবৈধভাবে ও জোরজবরদস্তিভাবে হাটের ইজারদাররা লাখ লাখ টাকা টোল আদায় করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব হাট-বাজারে ইজারদার প্রায় শতভাগ সরকারি দলের সমর্থক। বাংলা ১৩৪১ সনে আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের অধীনে ৮ হাটের নিলাম ডাক উঠেছে এক কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার ৬৯৯ টাকা। এ ছাড়া আছে পৌর এলাকার দুইটি হাট।
এসব হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের অভিযোগ, অধিকাংশ পণ্যের বেচাকেনায় কোনো রসিদ দেওয়া হয় না। ফলে ইজারদাররা স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ নিচ্ছে। তবে গবাদি পশু বেচাকেনার ক্ষেত্রে টোল আদায়ের রসিদ দেওয়ার প্রচলন থাকলেও সেখানেও করা হয় সূক্ষ্ণ কারচুপি। অধিকাংশ হাট একজন ইজারদার সমঝোতা অথবা অতিরিক্ত টাকা নিলাম ডাকে নিয়ে সেই হাটকে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ভিন্ন ভিন্ন পণ্যের ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে ভিন্ন ভিন্ন লোককে মাত্রাতিরিক্ত চড়া দামে সাব লিজ দিয়ে থাকে। যার ফলে হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাকে মাত্রা অতিরিক্ত টোল দিতে হয়। ইজারদারদের এহেন দৌরাত্ম্য দেখার কেউ নেই।
হাটের কোথাও কোনো টোল তালিকা না থাকায় এবং ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদ প্রদান না করায় সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে ১০ থেকে ৫০ গুণ বেশি টোল আদায় করা হয়ে থাকে। এসব হাট হলো- খিদিরপুর, চাঁদভা, গোরুরী, একদন্ত, কাজিরহাট, শিবপুর, কৈজুরি, লক্ষ্ণীপুর। এছাড়া রাস্তা দখল করে হাট-বাজারে বেচাকেনার অভিযোগ তো আছেই।
জানা গেছে, খিদিরপুর হাট ডাক হয়েছে ৩ লাখ ৬ হাজার, চাঁদভা ১৩ লাখ ২০ হাজার, গোরুরী ২১ লাখ ৫০ হাজার, একদন্ত ১ কোটি ১১ লাখ, কাজিরহাট ৭ লাখ ৯০ হাজার, শিবপুর ৬ লাখ ১ হাজার, কৈজুরী এক লাখ ৩২ হাজার ৩শ ২৩, লক্ষ্ণীপুর ৭ হাজার ৮৭৯ টাকা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত, আটঘরিয়া, দেবোত্তর, গোরুরী, খিদিরপুর, শ্রীপুর, শিবপুর, চাঁদভা, পারখিদিরপুর, রামেশ্বরপুর, রামচন্দ্রপুরসহ পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার টেবুনিয়া হাট সর্বত্র একই অবস্থা। সবগুলো হাটেই চলে ইজারদারের ইচ্ছা ও নিয়মমাফিক। এমনকি টোল নির্ধারণ ও আদায় অলিখিতভাবে তারাই করে। এসব হাটে ইজারদারদের মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায় ও দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।