ডিমলা উপজেলা নির্বাচন ভোটের মাঠে এমপির ৩ নিকটাত্মীয়
প্রকাশ | ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী
নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সংসদ সদস্য ও ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব উদ্দিন সরকারের ভাই, ভাতিজা ও ভাতিজি বউ এবারে ডিমলা উপজেলা নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে এমপির পরিবারের নিকটাত্মীয় এমন তিনজন প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি উপজেলা জুড়ে আলোচনা-সমলোচনার ঝড় উঠেছে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এমপির কোনো স্বজন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তাই স্বজনদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশ ডিমলায় মানা হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ ভোটাররা। ডিমলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইতোমধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। যা যাচাই বাছাইও হয়ে গেছে।
জেলা নির্বাচন অফিসার ও ডিমলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ডিমলা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এখন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় রয়েছে আগামী ২২ এপ্রিল ও ভোটগ্রহণ ৮ মে। ডিমলা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী ৪ জন হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি টানা দুই মেয়াদের নৌকা প্রতীকের উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক সরকার মিন্টু, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য ফেরদৌস পারভেজ ও ন্যাপ নেতা সাবেক কর কমিশনার আব্দুর রহমান।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ডিমলা সদর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নীরেন্দ্র নাথ রায়, ন্যাপের উপজেলা আহ্বায়ক থেকে সম্প্রতি আওয়ামী লীগে যোগদানকারী মোফাক্কারুল ইসলাম পেলব, বাকি প্রার্থী যথাক্রমে মো. স্বপন, হামিদার রহমান, উত্তম কুমার রায়, আবু সাঈদ, সুজয় চন্দ্র রায় সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
অপরদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন এমপির আপন ভাতিজি বউ ডিমলা সদর ইউনিয়নের মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পারুল বেগম। অপর ২ জন প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা তাঁতি লীগের সভাপতি জাহানারা বেগম ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াত সমর্থিত আয়শা সিদ্দিকাও রয়েছেন।
এ ব্যাপারে কথা হলে এমপি আফতাব উদ্দিন সরকারের চাচাতো ভাই ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ারুল হক সরকার মিন্টু বলেন, 'দলীয় সিদ্ধান্তের কোনো চিঠি এখনো হাতে পাইনি। তবে পত্রপত্রিকায় জানতে পেরেছি মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। যদি দলীয় চিঠি হাতে পাই তাহলে সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে আগামী ২২ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করব।'
এ ব্যাপারে এমপির ভাতিজা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফেরদৌস পারভেজ বলেন, 'আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। এখানে এমপি চাচার কোনো প্রভাব নেই। নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি ভোট করার জন্য। সুষ্ঠু ভোট হলে আমি প্রতিদ্বন্দ্বী অপর তিনজন যে ভোট পাবে তাদের চেয়ে দ্বিগুণ ভোট পেয়ে বিজয়ী হবো।'
সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার বলেন, চাচাতো ভাই আনোয়াররুল হক সরকার ও ভাতিজা ফেরদৌস পারভেজের প্রার্থী হওয়া নিয়ে শুরু থেকেই বিরোধিতা করেছেন। এখন দলের সিদ্ধান্ত মন্ত্রী বা এমপির কোনো স্বজন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, তা সবাই মানবে বলে মনে করেন তিনি।