শ্রীপুরে তালাবদ্ধ ঘরে নারীর অর্ধগলিত লাশ! স্বামী উধাও

বদলগাছীতে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন পাঁচ জেলায় পাঁচ মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ | ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
গাজীপুরের শ্রীপুরে দুর্গন্ধে খোঁজ মিলল তালাবদ্ধ ঘরে নারীর অর্ধগলিত লাশ! এরপর থেকে পলাতক নিহতের স্বামী। এদিকে, নওগাঁর বদলগাছীতে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, চট্টগ্রামের রাউজান, ঝালকাঠির নলছিটি, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ জামালপুরের বকশীগঞ্জ ও বাগেরহাটের মোলস্নাহাটে শিশুসহ পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট- গাজীপুর ও শ্রীপুর প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরের শ্রীপুরে তালাবদ্ধ ঘর থেকে আজিদা বেগম নামে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার দুপুরে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে এ লাশ উদ্ধার হয়। নিহত আজিদা বেগম (৩৮) নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার হাইলাটি গ্রামের মৃত রুমালী হোসেনের মেয়ে। তিনি স্থানীয় জৈনা বাজার এলাকার জনৈক বাবুল খানের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় দুলাল কুমার ঘোষের হোটেলে কাজ করতেন। তবে, নিহতের স্বামীর নাম পাওয়া যায়নি। জানা যায়, গত ৯ মাস ধরে ওই বাড়ির একটি টিনশেড রুম ভাড়া নিয়ে থাকতেন আজিদা। গত মাস থেকে তার স্বামীও থাকা শুরু করেন। আজিদা নিয়মিত থাকলেও তার স্বামী মাঝেমধ্যে বাসায় থাকতেন। ঈদের এক সপ্তাহ পর থেকেই ওই ঘর তালাবদ্ধ। রোববার সকাল থেকেই ওই ঘর থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে ঘরের তালা ভেঙে গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও তদন্তের পর যথাযথ আইনি পদক্ষেপ চলমান। বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, নওগাঁর বদলগাছীতে আরসী নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর খুন করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী এমরানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় খুনি স্বামী এমরানকে আটক করেছে পুলিশ। জানা যায়, উপজেলার হলুদবিহার নিবাসী মিরাজ উদ্দীনের ছেলে এমরানের সঙ্গে একই উপজেরার কার্তীকাহার এলাকার আলমের মেয়ে আরসীর বছরখানেক আগে বিয়ে হয়। মাদকাসক্ত স্বামী এমরানের সঙ্গে স্ত্রী আরসীর টাকা-পয়সা নিয়ে প্রায় ঝগড়া-বিবাদ হতো। গত ঈদে আরসী বেড়ানোর জন্য মায়ের বাড়িতে আসেন। স্বামী এমরান গত শনিবার রাতে শ্বশুর বাড়িতেই ছিল। রাত ১টার সময় এমরানের স্ত্রীকে ডাকাডাকি ও এমরানের চিৎকারে প্রতিবেশী মিজানুর এবং মনির আসেন। তারা এসে দেখেন আরসী মারা গেছেন। স্বজনরা আসার পর আরসীর গলায় ও ঘাড়ে ফোলার দাগ দেখে এমরানকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে। পরে এমরান আরসীকে উপুড় করে মাজায় বসে দুই হাত দিয়ে গলা এবং ঘাড়ে চাপা দিয়ে মেরেছেন বলে স্বীকার করেন। এবিষয়ে মেয়ের বাবা সাহ আলম বাদী হয়ে বদলগাছী থানায় মামলা করেছেন। রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ভাসমান অবস্থায় এক ব্যক্তির লাশ রাউজান থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, গত শনিবার সকালে লুঙ্গি ও শার্ট পড়া অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। সবার ধারণা কালুরঘাটের দিক থেকে জোয়ারের পানিতে লাশটি এখানে ভেসে এসেছে। স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উঠিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ বিষয়ে থানার এসআই জাবেদ বলেন, নদীর জোয়ারে ভেসে আসা অজ্ঞাতনামা মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। পরিচয় শনাক্ত ও মৃতু্যর কারণ উদঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে। নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি জানান, ঝালকাঠির নলছিটিতে মা ও দাদির সঙ্গে সুগন্ধা নদীতে গঙ্গা স্নানে গিয়ে নিখোঁজের ৮ দিন পর অদিত্য চক্রবর্তী (৮) নামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে উপজেলার চড়বহরমপুর এলাকায় সুগন্ধা নদীর তীর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নলছিটি থানার ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি নিশ্চিত করেছেন। নিহত অদিত্য চক্রবর্তী শহরের বাতুরতলা এলাকার স্টুডিও ব্যবসায়ী শিমুল চক্রবর্তীর একমাত্র ছেলে ও নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরর তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। গত ১৩ এপ্রিল সকালে আদিত্য দাদি ও মা মিতু চক্রবর্তীর সঙ্গে গঙ্গা স্নানের জন্য সুগন্ধা নদীর তীরে আসে। তিনজনই একসঙ্গে স্নানে নামে। এ সময় নদীর স্রোতে সে ভেসে যায়। গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক যুবকের (১৮) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে হাইওয়ে পুলিশ। রোববার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মাহাবুর রহমান। এর আগে উপজেলার ফাঁসিতলা এলাকার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ওভার ব্রিজের নিচ থেকে রাতে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ওভার ব্রিজের নিচে রাতে অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে তারা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে। ওসি জানান, ওই যুবকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোনো পরিবহণের ছাদ থেকে পড়ে মৃতু্য হতে পারে। বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি জানান, জামালপুরের বকশীগঞ্জে নিজ ঘরে জুয়েল মিয়া (২৬) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলীরপাড়া গ্রাম থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জুয়েল মিয়া দক্ষিণ আলীরপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে। জানা গেছে, জুয়েল শনিবার রাতে খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েন। সকালে ঘুম থেকে না জাগলে বাড়ির লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে তাকে ধরনার সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া জুয়েলের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। বকশীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান বলেন, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনো নিশ্চিত নয়। তাই ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি জামালপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের মোলস্নাহাট উপজেলার শাসন গ্রামে সিনহা ইসলাম নামের ১৮ মাস বয়সের একজন মেয়েশিশুর রহস্যজনক মৃতু্য হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ রোববার সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। জানা গেছে, শিশুটির দাদা বাড়ির সঙ্গে তার নানা বাড়ির দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। আর এই বিরোধের কারণে বিগত ৫ মাস ধরে শিশুটিকে নিয়ে তার মা শাসন গ্রামের নানা মাগরিব শরীফের বাড়িতে থাকতেন। শনিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে মা হাফিজা বেগম শিশুটিকে দুধ খাইয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রোববার ভোর হতে না হতেই মা জেগে দেখেন শিশুটি খাটের উপর মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। মোলস্নাহাট থানার ওসি এসএম আশরাফুল আলম জানান, তদন্ত রিপোর্ট না পেলে মৃতু্যর সঠিক কারণ জানা যাবে না। বিষয়টির তদন্ত চলছে।