গ্রীষ্মের প্রথম দিকে তেমন গরম অনুভূত না হলেও জ্যৈষ্ঠের সঙ্গেই শুরু হয়েছে দাবদাহ। ইতোমধ্যে সারাদেশেই পারদ ৪০-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী দুই দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। পূর্বাভাস বলছে, চলমান দাবদাহ আরও চার দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এমন গরমে দীর্ঘ সময় রোদে থাকলে হিটস্ট্রোক হয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে- এমনটাই অনুমান করছেন পরিবেশবিদরা। নওগাঁর নিয়ামতপুরে প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশু ও বয়স্করা। হঠাৎ শিশুরা অসুস্থ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা। হাসপাতালে বেড সংকট থাকায় মেঝেতেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে থাকতে হচ্ছে অভিভাবকদের। এ ছাড়া অতিরিক্ত চাপের কারণে সেবার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশুদের অভিভাবকরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন প্রায় ১৫-১৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ভর্তি হয়েছে। শনিবার ১৯ জন শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
শনিবার সকালে ডায়রিয়া আক্রান্ত এক শিশুর বাবা আনারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, 'আমার ছেলের বয়স সাত মাস। শুক্রবার সকালে হঠাৎ বমি, জ্বর ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে সকালেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ভর্তি করিয়েছি। বেড না থাকায় মেঝেতেই থাকতে হয়েছে। আজ একটু সুস্থবোধ হওয়ায় ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় গিয়েই ছেলের চিকিৎসা করাব।'
২১ মাস বয়সি শিশু জাহিদ হাসানকে নিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের মেঝেতে বসে ছিলেন বাবা এমরান হোসেন। তিনি বলেন, হঠাৎ শুক্রবার সকাল থেকেই ছেলের জ্বর, বমি ও পায়খানা শুরু হয়। সারাদিন বাসায় চিকিৎসা দিলেও ভালো হওয়ার লক্ষণ না থাকায় আজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ভর্তি করিয়েছেন। বেড না থাকায় মেঝেতেই ছেলেকে নিয়ে থাকতে হচ্ছে।
নিয়ামতপুর স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. প্রণব কুমার সাহা বলেন, প্রচন্ড গরমের কারণে প্রতিদিন শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ঈদের পর থেকেই হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বাড়ছে। প্রচন্ড গরমের কারণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। চিকিৎসক ও নার্স সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে এই গরমে সবাইকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন তিনি।