ঢাকার উত্তরায় ৭ বছর বয়সে হারিয়ে যান জামালপুরের বকশীগঞ্জের শাহীদা বেগম। অবশেষে ২৭ বছর পর বকশীগঞ্জে নিজ বাড়িতে ফিরলেন পোশাক কর্মী শাহীদা।
নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবন পার করা শাহীদা বাড়িতে ফিরলেও দেখা পাননি বাবা-মায়ের। কারণ ৪ বছর আগেই তার বাবা ও মায়ের মৃতু্য হয়। তবে তার বড় বোন খালেদা বেগমের সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। বোনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ায় যেন নতুন পৃথিবীর সন্ধান পান শাহীদা বেগম।
জানা গেছে, জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার নিলাখিয়া ইউনিয়নের দিকপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম খলিল ১৯৯৭ সালে জীবিকার তাগিদে স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে পাড়ি জমান রাজধানী ঢাকার উত্তরায়। সেখানে তার সেজো মেয়ে শাহীদা বেগম লাকড়ি সংগ্রহের কাজ করতে গিয়ে হারিয়ে যান। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি শাহীদাকে।
প্রথমে কুমিলস্না পরে নারায়ণগঞ্জে এক ফায়ার সার্ভিস কর্মীর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ পান শাহীদা। সেই থেকে নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে চলছে তার জীবন। এর মধ্যেই গাজীপুরের কালীগঞ্জের রাজমিস্ত্রি সেলিম মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় শাহীদার। এই অবস্থায় কেটে গেছে শাহীদার জীবনের ২৭টি বছর।
শাহীদা বেগম বার বার তার নিজ ভূমিতে ফেরার চেষ্টা করলেও ঠিকানা ও কারও পরিচয় না জানার কারণে ফেরা সম্ভব হয়নি। তবে নিজ গ্রাম দিকপাড়া ও থানার নাম বকশীগঞ্জ মুখস্ত থাকায় সেই ভরসা নিয়েই গত ১৪ এপ্রিল ঢাকা থেকে স্বামী ও একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে রওনা দেন বকশীগঞ্জের উদ্দেশে। অবশেষে বকশীগঞ্জ শহরে পৌঁছে বিভিন্ন মানুষের সাহায্য নিয়ে খুঁজে বের করেন দিকপাড়া গ্রাম।
শাহীদা বেগম জানান, 'জীবনে কল্পনা করিনি আমি নতুন করে আমার বাড়ি ও আত্মীয় স্বজনদের খুঁজে পাবো। ২৭ বছর পর ভাই, বোন, আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পেয়ে নতুন করে আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।'