শ্রীপুরে ঈদ উপহার হিসেবে দুই গ্রামবাসী পেলো 'কাঠের সেতু'!
প্রকাশ | ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
দুই গ্রামের মানুষকে ঈদের উপহার হিসেবে চলাচলের জন্য খালের উপর কাঠ দিয়ে ৩৫ ফুট লম্বা সেতু তৈরি করে দিয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরের দুস্থ সেবায় যুব উন্নয়ন সমিতি নামের একটি সংগঠন। গত শনিবার বিকালে পৌর এলাকার লোহাগাছ ও রাজাবাড়ি ইউনিয়নের বিন্দুবাড়ি গ্রামের সংযোগস্থলে নির্মিত সেতুটি লোকজনের চলাচলের জন্য উপযোগী করে দেওয়া হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের বিন্দুবাড়ি গ্রাম ও শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ গ্রামের শেষ প্রান্তে অবস্থিত একটি খাল যা 'কাটা খাল' নামে পরিচিত। খালের একপাড়ে বিন্দুবাড়ি গ্রামে একটি উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। রয়েছে ২টি বাজার ও ভোট কেন্দ্রও। আর ওপারে লোহাগাছ গ্রাম ছাড়াও জিউসি এলাকা। কিন্তু এ দুই গ্রামের লোকজনের চলাচলের রাস্তায় কোনো সংযোগ সেতু না থাকায় যাতায়াত ছিল কষ্টসাধ্য। প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার লোকজনের চলাচল ছিল বাঁশের সাঁকো দিয়ে। মাঝেমধ্যেই সেটা ভেঙে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতো সাধারণ মানুষ। ঈদ উপলক্ষে লোহাগাছ দুস্থ সেবায় যুব উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ঈদের ২ দিন আগেই শুরু হয় কাঠ দিয়ে ৩৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪ ফুট প্রস্থের ওই সেতুর কাজ। ঈদের ২ দিন পর সেটি চলাচলের জন্য উপযোগী হয়।
স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সেতু নির্মাণে অংশ নিয়েছেন লোহাগাছ দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিলিটারি, সাধারণ সম্পাদক আলফাজ সরকার আকাশ, অবসরপ্রাপ্ত ইএসএম নিজাম উদ্দিন, কার্পেন্টার আব্দুল সাহিদ, আব্দুল কাদের, ফজলুল হক, মনির হোসেন, রিয়াজ উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন, হযরত আলী, রফিকুল ইসলাম, হারুন উর রশিদ, শামছুল হক, সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিমেল, সুজন মিয়া, এনামুল হক, আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ। কাঠের সেতুটি তৈরি হওয়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে 'আনন্দের বন্যা' বইছে। স্থানীয় আব্দুল আউয়াল মিলিটারি জানান, সেতুর কারণে কৃষকদের মাঠ থেকে ফসল বাড়িতে নেওয়া এবং ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজ ও হাট-বাজারে যাতায়াত সহজ হয়েছে।
সমিতির সভাপতি আলফাজ সরকার আকাশ বলেন, এই সেতু না থাকলে লোহাগাছ গ্রাম থেকে বিন্দুবাড়ির ওই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে ঘুরতে হতো অন্তত ১ কিলোমিটার পথ। শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের ওপর ভর করে খাল দিয়ে কোনোরকম পারাপার হওয়া গেলেও বর্ষায় কষ্টের সীমা থাকে না। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল কাটা খালটিতে একটি সেতু নির্মাণের।
তিনি আরও বলেন, 'দুস্থ সেবায় যুব উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আজকে এ কষ্টের পরিত্রাণ মিলেছে। কৃতজ্ঞতা থাকবে যারা শ্রম, অর্থ ও সময় দিয়ে কালভার্টের জন্য কাজ করেছেন। সবার সহযোগিতা পেলে আগামীতে সমাজসেবামূলক আরও কাজ করতে পারবে সংগঠনটি।