কুষ্টিয়ায় গুলি করার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা কারাগারে
প্রকাশ | ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় চায়ের দোকানে দুজনকে গুলি করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় মিরপুর থানায় গুলিতে আহত হাসেম গাজীর ভাতিজা সেন্টু গাজী বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা আতাহার আলীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা হাবিবুলস্নাহ মামলা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই মামলায় মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাহার আলীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় ১৫ জনের নাম উলেস্নখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। আতাহার আলী পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তাকেসহ দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ। পরে আরও একজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ দুই ব্যক্তি হলেন উপজেলার ফুলবাড়ীর শিমুলিয়া এলাকার হাসেম গাজী (৫৫) ও বহলবাড়ি সাতবাড়িয়া এলাকার রেজাউল ইসলাম (৫০)। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মিরপুর থানা পুলিশ সূত্র জানায়, আতাহারের ব্যবহৃত পিস্তল ও শটগান উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত গভীর রাতে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ওই দুটি আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গে গুলিও উদ্ধার করে। ওই পিস্তল ও শটগানের লাইসেন্স রয়েছে।
কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন, ক্রাইম ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, রাতেই আতাহার আলীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি পিস্তল দিয়ে গুলি করার কথা স্বীকার করেন। আতাহার জানিয়েছেন, এলাকার লোকজন তাকে মারার উদ্দেশ্যে ঘিরে ধরেন। প্রাণ বাঁচতে তিনি গুলি ছুড়েছেন। রাতেই তাকে নিয়ে তার বাড়িতে যাওয়া হয়। বাড়িতে তার দেখানো জায়গা থেকে একটি পিস্তল ও একটি শটগান উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি তাজা গুলিও পাওয়া গেছে।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতা আতাহার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর পক্ষে কাজ করেছিলেন। এ আসনে জয়ী হন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন।
আহত হাসেম গাজীর ভাতিজা সেন্টু গাজী বলেন, 'আমরা কৃষিকাজ করে সংসার চালাই। গত সংসদ নির্বাচনে আমিসহ আমার পরিবারের লোকজন আওয়ামী লীগের নেতা কামারুল আরেফিনের ট্রাক প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করি। এতে আতাহার ক্ষুব্ধ হন। এ নিয়ে আমাদের বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এর জের ধরে শনিবার আতাহার গুলি করেছেন। আমি এর বিচার চাই।'