পিরোজপুরে একটি ইন্সু্যরেন্স কোম্পানির আড়ালে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে এক ব্যবসায়ীর পরিবারের চার সদস্যদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা বার বার ধর্ণা দিয়েও পপুলার লাইফ ইন্সু্যরেন্স কোম্পানির পিরোজপুর শাখার এ দুই কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তাদের টাকা ফেরত পাননি। অবশেষে তারা আদালতে মামলা করেছেন। আদালত অফিসার ইনচার্জ সিআইডি, পিরোজপুরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পিরোজপুর শহরের পুরাতন ঈদগাহ সংলগ্ন স্থানে মেসার্স মোলস্না ট্রেডার্সের প্রোপাইটর মো. আলমগীর শেখ নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। এই ব্যবসায়ীর সঙ্গে সুযোগ সন্ধানী পপুলার লাইফ ইন্সু্যরেন্স কোম্পানি লিমিটেড (ইসলামী ডিপিএস) (২৭৩০) পিরোজপুর শাখার ইনচার্জ হেমায়েত উদ্দিন খন্দকার এবং তার সহযোগী একই শাখার হিসাব ইনচার্জ বেলস্নাল খান সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। হেমায়েত উদ্দিন খন্দকার পিরোজপুর পৌর এলাকার ছোট খলিশাখালীর বাসিন্দা মোশারফ খন্দকারের ছেলে এবং বেলস্নাল খান সদর উপজেলার কালীকাঠির বাসিন্দা মৃত আ. ছত্তার খানের ছেলে। তারা সুসম্পর্কের আড়ালে অর্থ হাতিয়ে নিতে ব্যবসায়ী আলমগীর শেখ এবং তার পরিবারের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য ডিপিএস প্রকল্পে বীমা চালু করতে নানাভাবে উৎসাহ দেন। একপর্যায়ে তাদের উৎসাহে আলমগীর শেখ রাজি হন। তার স্ত্রী খুকি আক্তারের নামে দুটি পৃথক ডিপিএস চালু করার কথা থাকলেও এ দুই কর্মকর্তা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে একই তারিখ দেখিয়ে (৩০ নভেম্বর ২০১৮) ১২ বছর মেয়াদি ৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা বীমা অঙ্কের পরপর দু'টি বীমা খোলা হয়েছে বলে দেখান। তারা এই দু'টি ডিপিএসের বিপরীতে ভুয়া প্রাপ্তি রশিদ দিয়ে খুকির কাছ থেকে মোট ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। হেমায়েত ও বেলস্নাল চক্র আলমগীরের ছেলে আবু ছালেহর কাছ থেকেও ৫৬ হাজার, কন্যা রিফাত জাহান রানীর কাছ থেকে ৫৫ হাজার এবং ভায়রার মেয়ে নাছরিন আক্তারের কাছ থেকে ৬১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। পরে পপুলার ইন্সু্যরেন্স কোম্পানির ঢাকা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে হেমায়েত ও বেলস্নালের প্রতারণা এবং জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। ভুক্তভোগী পরিবার বার বার শহরের পাড়েরহাট রোডস্থ পপুলার লাইফ ইন্সু্যরেন্স কোম্পানির শাখা অফিসে ধর্ণা দিয়ে টাকা ফেরত পেতে ব্যর্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্তরা ইন্সু্যরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত আবেদন করেও সুরাহা পাননি। অবশেষে ক্ষতিগ্রস্ত চারজনের পক্ষে বাদী হয়ে আলমগীর শেখ পিরোজপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (দ:বি: ৪০৬/৪২০/১১৪ ধারায় সি.আর-৫৮৭/২৩) নালিশি মামলা করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হেমায়েত খন্দকার এবং বেলস্নাল খানের মোবাইল ফোনে তাদের বক্তব্য জানতে চেয়ে বার বার কল করা হলে রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।