চিলমারীতে এসএসসি'র ভুল উত্তর সরবরাহ বিপাকে ২৫ শিক্ষার্থী
প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪ সালের এসএসসি পরিক্ষার এমসিকিউ উত্তরপত্রে ভুল উত্তর সরবরাহ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ২৫ শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম দেবাশীষ চন্দ্র। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রম্নয়ারি পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৫ মিনিট আগে সহকারী শিক্ষক দেবাশীষ চন্দ্র কেন্দ্রের ১৪নং কক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের এমসিকিউ উত্তর সরবরাহ করা হবে জানিয়ে উত্তর লিখতে নিষেধ করেন। পরে তিনি একটি লিখিত কাগজ হাতে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের এমসিকিউ উত্তর লিখতে বলেন।
শিক্ষার্থী শাহানাজ পারভীন, পুষ্পিতা আক্তার, ঈষিতা খাতুন বলেন, পরীক্ষা শেষে আমরা বাড়িতে ফিরে দেখি স্যারের সরবরাহ করা সবগুলো উত্তর ভুল। এ বিষয়ে স্যারের কাছে গেলে তিনি বলেন, সমস্যা নেই তোমরা পাস করলেই হলো।
শিক্ষার্থী শাহানাজ পারভীন আরও বলেন, অভিভাবকদের সঙ্গে পরামর্শ করে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করতে দেরি হয়েছে। অভিযোগ পত্রের অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড দিনাজপুরের চেয়ারম্যান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষার্থী ঈষিতা খাতুনের বাবা ঈদ্রিস মন্ডল বলেন, 'আমার মেয়ে দেবাশীষ স্যারের কাছে ১৪ মাস গণিত বিষয়ে প্রাইভেট পড়েছেন। প্রস্তুতিও ভালো ছিল। কিন্তু স্যার ভুল উত্তর লিখে দেওয়ায় আমার মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।'
শিক্ষার্থী তাসনিম এলাহী তুরার বাবা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর-ই এলাহী তুহিন বলেন, 'বিষয়টি জানতে পেরে আমি ওই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারিনি।'
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নিয়ে একজন শিক্ষক এমনটা করতে পারেন না। ওই শিক্ষকের ভুল উত্তর লিখে ওই কক্ষের ৪৮ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪৬ জনই লিখে বিপাকে পড়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক দেবাশীষ চন্দ্র বলেন, 'পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ধরনের কোনো উত্তর সরবরাহ করিনি। অভিযোগটি ভিত্তিহীন।'
থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই।
থানাহাট এ ইউ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৈয়ব আলী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী পাস করা নিয়ে সংশয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।