উলিপুরে পোকা খাওয়া টিসিবির চাল বিক্রি
প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পোকা, পঁচা, দুর্গন্ধযুক্ত ও নিম্নমানের চাল বিক্রি করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৫৩ হাজার ২৬৫ জন কার্ডধারীর মধ্যে ১৭ জন ডিলার এই চাল বিক্রি করেন। শনিবার উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি অফিস মাঠে চাল বিতরণের এই দৃশ্য দেখা যায়।
নিম্নমানের চাল বিক্রির অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করলেও এর দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন টিসিবি পণ্যে সরবরাহকারী দিয়া ট্রেডার্সের মালিক ওবায়দুলস্নাহ সরকার। তিনি বলেন, ভোক্তারা এই চাল নিতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু তেলসহ অন্যান্য পণ্যের কারণে বাধ্য হয়েই নিচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) মেসবাহুর হোসাইন বলেন, সরকারিভাবে যে চাল গুদামে আসে সেই চাল বিতরণ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় টিসিবি সুবিধাভোগী ৫৩ হাজার ২৬২ জন। পৌরসভার ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৮২২ জন ও বজরা ইউনিয়নের ৫, ৬, ৭ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দু'টি পয়েন্টে প্রায় ২ হাজার ৭৮৭ জন সুবিধাভোগীকে টিসিবির চাল, ডাল ও তেল বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। নিয়মানুযায়ী প্রতিটি টিসিবি ডিলাররা ওএমএস ডিলারদের কাছে চাল সংগ্রহ করে বিক্রি করেন। অভিযোগ রয়েছে গুদামের ভেতরে পুরাতন ও দুর্গন্ধযুক্ত চালের বস্তা নতুন করে সেলাই করা হয়, এসব চালেও ওজনে কম।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের কার্ডধারী আলিমা খাতুন, শফিকুল ইসলাম, জরিনা খাতুন, শমশের আলী ও মনোয়ারা বেগম বলেন টিসিবির তেল, ডাল ভালো কিন্তু হাতিয়া পোকা আক্রান্ত দুর্গন্ধযুক্ত চাল বাধ্য হয়ে নিতে হচ্ছে। কারণ চাল না নিলে তেলসহ অন্য পণ্য ডিলাররা দেন না।
ওএমএস ডিলার বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ বলেন, খাদ্য গুদাম থেকে যে চাল সরবরাহ করেছে সেই চাল আমরা টিসিবি ডিলারদের দিয়েছি। এ দায় আমাদের নয়।
দুর্গাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, গত শনিবার দিয়া ট্রেডার্সের মালিক ওবায়দুলস্নাহ সরকার এই পচা চাল বিতরণ করেন। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, খাদ্য গুদাম থেকে যে চাল দিয়েছে সেটাই আমরা সরবরাহ করছি। এখানে আমাদের করার কিছু নেই।
খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, উলিপুর খাদ্য গুদামে চাল সংকট থাকায় ওই চালগুলো কুড়িগ্রাম সদর থেকে দুই মাস আগে আনা হয়েছে। আমি কুড়িগ্রামে কথা বলেছি চাল পরিবর্তন করে ভালো মানের চাল সরবরাহ করা হবে।
ইউএনও আতাউর রহমান বলেন, টিসিবি ডিলারদের নিম্ন মানের চাল না নেওয়ার জন্য বলেছি এবং উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে এই চাল ফেরত দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।