দুর্গাপুরে মায়ের কাছে নেশার টাকা চেয়ে না পেয়ে ছেলের আত্মহত্যা
তাহিরপুরে কয়লা শ্রমিক ও মোলস্নাহাটে শিশুকে হত্যা
প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে কয়লা শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা এবং বাগেরহাটের মোলস্নাহাটে ৫ বছরের শিশুকে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে, নেত্রকোনার দুর্গাপুরে মায়ের কাছে নেশার টাকা চেয়ে না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে এক যুবক। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট-
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে কয়লা উত্তোলনের জের ধরে এক কয়লা শ্রমিককে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। নিহত কয়লা শ্রমিকের নাম জজ মিয়া (৪০)। তিনি উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী লালঘাট গ্রামের কিতাব আলীর ছেলে। গত রোববার রাত সাড়ে ১২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তার মৃতু্য হয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম বাঁশতলার মূল হোতা শফিকুল ইসলাম (৩৮), একই গ্রামের ফখর উদ্দিন (৩৫) এবং আব্দুল মজিদ (৫০)।
জানা যায়, গত শনিবার সকালে লালঘাট ও বাঁশতলা গ্রামের কয়েকজন কয়লা শ্রমিক লালঘাট সীমান্ত দিয়ে ওপারে ভারত যান চোরাইপথে কয়লা আনার জন্য। ভারতে গিয়ে কয়লা উত্তোলনের জায়গা নিয়ে জজ মিয়ার আত্মীয় বাচ্চু মিয়া এবং পার্শ্ববর্তী বাঁশতলা গ্রামের বাবুল মড়লগংদের কথা কাটাকাটি হয়। সে সময় সঙ্গে থাকা অন্য কয়লা শ্রমিকরা ঘটনাটি একে-অপরের সঙ্গে তাৎক্ষণিক মীমাংসা করে দেন। একদিন পর রোববার সকালে জজ মিয়াসহ কয়েকজন ওপার থেকে কয়লা নিয়ে বাঁশতলা গ্রামের পেছনে বালুচড় দিয়ে যাওয়ার পথে আগ থেকে ওৎপেতে থাকা বাবুল মড়লগংরা তাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। এসময় অন্য শ্রমিকরা পালিয়ে আসতে পারলেও জজ মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাদের কবল থেকে উদ্ধার করে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে ভর্তি করে। তার অবস্থা অবনতি দেখে চিকিৎসকরা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে জজ মিয়ার মৃতু্য হয়।
তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন বলেন, এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি হত্যা মামলার দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের মোলস্নাহাট উপজেলার পলস্নীতে আহসান বিশ্বাস (৫) নামে একজন শিশুকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কচুড়িয়া গ্রামের একটি পানের বরজের মধ্যে গর্তের ভেতর থেকে শনিবার বিকালে মুখ, মাথা এবং হাত-পা সার্জিক্যাল টেপ দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এর আগের দিন শুক্রবার বিকালে শিশুটি নিখোঁজ হয়।
শিশুটির পরিবার জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যার আগে শিশুটি নানা মাওলানা ফিরোজ আহমেদের বাড়ি থেকে পাশের বাড়ি খেলতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে তার নানা মোলস্নাহাট থানায় একটি জিডি করেন। শনিবার বিকালে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মোলস্নাহাট থানার ওসি এসএম আশরাফুল আলম জানান, ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিকে বলাৎকার করে মুখে, মাথায় ও হাতে-পায়ে সার্জিক্যাল টেপ পেঁচিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিহত শিশু আহসান বিশ্বাস নড়াইলের নড়াগাতী উপজেলার জয়নগর গ্রামের মো. কামরুজ্জামানের ছেলে।
দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোনার দুর্গাপুরে মায়ের কাছে নেশার টাকা চেয়ে না পেয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন শেখ ফরিদ (১৮) নামে এক তরুণ। সোমবার সকালে দুর্গাপুর পৌর শহরের দক্ষিণপাড়ার সুসং আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার একটি আমগাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত শেখ ফরিদ ওই এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আব্দুল করিমের ছেলে।
জানা গেছে, শেখ ফরিদ নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। মাদক সেবনের জন্য মায়ের কাছ থেকে টাকা নিতেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার রাতে তার মায়ের কাছে ৪০০ টাকা চান। তার মা টাকা নেই জানালে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে আর ফেরেননি। সোমবার সকালে তাদের ঘরের পাশেই একটি আমগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় ফরিদকে দেখতে পায় প্রতিবেশীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।