শোলাকিয়ায় চলছে ঈদ জামাতের প্রস্তুতি
মুসলিস্নদের নিরাপত্তায় থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। এবার এই ঈদগাহে এটি ১৯৭তম ঈদ জামাত
প্রকাশ | ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
আসন্ন ঈদুল ফিতরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কিশোরগঞ্জের ২৭৪ বছরের পুরনো ও বহুল আলোচিত শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। মুসলিস্নদের নিরাপত্তায় থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। এবার এই ঈদগাহে এটি ১৯৭তম ঈদ জামাত।
এদিক ঈদ জামাতের নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ প্রস্তুতির অগ্রগতি নিয়ে রোববার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ এবংর্ যাব-১৪ ময়মনসিংহ অঞ্চলের সিইও মহিবুদ্দিন খন্দকার।
এ সময়র্ যাব-১৪ ময়মনসিংহ অঞ্চলের সিইও মহিবুদ্দিন খন্দকার বলেন, ঈদের দিনের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যকর্ যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। র?্যাবের নিয়মিত টহলের পাশাপাশি মোটর সাইকেলেও বিশেষ টহলের ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। এ ছাড়া ঈদগাহে ওয়াচ টাওয়ারও রাখা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, ঈদগাহকে কেন্দ্র করে থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি থাকবে বাইনোকুলার, থাকবে ড্রোন ক্যামেরাসহ পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টরসহ পুলিশের অনেকগুলো চেকপোস্ট। এ ছাড়া বোম ডিসপোজাল টিমও থাকবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, বরাবরের মতো এবারও দূরবর্তী মুসলিস্নদের ঈদ জামাতে যাতায়াতের সুবিধার্থে ঈদের দিন ভৈরব ও ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জে দুটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। দূর থেকে আসা মুসলিস্নদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এবার পুলিশ ওর্ যাবের পাশাপাশি ৫ পস্নাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। ঈদের দুই দিন আগেই নামাজের জন্য মাঠের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, এবার জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। এতে ইমামতি করবেন নিয়মিত ইমাম বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
উলেস্নখ্য, ১৭৫০ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই ঈদগাহ ময়দানের। তবে ১৮২৮ সালে প্রথম আনুমানিক সোয়া লাখ মুসলিস্ন একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন বলে জনশ্রম্নতি রয়েছে। সেই থেকেই এই ঈদগাহসহ পুরো এলাকার নামকরণ হয়েছে 'শোলাকিয়া।'
১৮২৮ সাল থেকে জামাত গণনায় এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯৭তম জামাত। এখানে এখন প্রতিবছর দেশের নানা প্রান্তের প্রায় পাঁচ লাখ মুসলিস্ন ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।
শোলাকিয়ার একটি বিরল ঐতিহ্য হচ্ছে- গুলি ফুটিয়ে জামাত শুরু। জামাত শুরুর ১৫ মিনিট আগে তিনটি, ১০ মিনিট আগে দুটি এবং ৫ মিনিট আগে একটি শটগানের গুলি ফুটিয়ে নামাজের সংকেত দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন এখানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর থেকেই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সেদিনের হামলায় দুইজন পুলিশ সদস্য ও একজন গৃহবধূ নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন অন্তত ১০ পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে একজন জঙ্গি সদস্যও নিহত হয়েছিলেন।