বেলাবোতে ভুলভাবে ক্যানোলা করায় শিশুর পায়ে পচন

নরসিংদীর বেলাবোতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুলভাবে ক্যানোলা করার কারণে রৌজা নামে ১৪ মাসের এক শিশুর পায়ে পচন ধরেছে। বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় ওই শিশুটি ঢাকা সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বিচার চেয়ে শিশুর বাবা বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বেলাব থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিশুটি উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের ধুকুন্দি প্রধান বাড়ির তোফাজ্জল প্রধানের মেয়ে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বেলাবো উপজেলার চরউজিলাব ইউনিয়নের বারৈচা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত বেসরকারি বারৈচা জেনারেল হাসপাতালে ধুকুন্দি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন গত ২৭ মার্চ তার ছোট মেয়ে রৌজাকে ঠান্ডাজনিত কারণে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান। এসময় হাসপাতালে কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডা. সিফাত উলস্নাহ শিশুটির নিউমোনিয়া হয়েছে বলে জানান। পরে শিশুটির পায়ে ক্যানোলা করা হয়। কিন্তু এর কয়েকদিন পরেই শিশুটির ক্যানোলার জায়গায় পচন ধরে। দিন দিন পচনের মাত্রা বাড়তে থাকে। এসময় শিশুটির পিতা বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়ে ব্যর্থ হন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে শিশুটি ৪ দিন যাবত এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড পস্নাস্টিক সার্জারি ইউনিটের এসিসটেন্ট প্রফেসর ডা. রোমানা পারভীনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে শিশুটির পচন ধরা পায়ে পস্নাস্টিক সার্জারি করতে হবে। শিশুর বাবা তোফাজ্জল হোসেন জানান, আমার শিশু সন্তানের পায়ে তারা ভুলভাবে কেনোলা করেছে। তাদের ভুল চিকিৎসার কারনে আমার মেয়ের পায়ে পচন ধরেছে। ডাক্তার বলেছে পস্নাস্টিক সার্জারি করতে হবে। আমি বেলাবো থানায় ও বেলাবো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। বারৈচা জেনারেল প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক পক্ষের একজন আমজাত হোসেন বলেন, 'কেনোলা করার পর বাচ্চা সম্ভবত নাড়াচাড়া করায় কেনোলার স্থানে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে। তবে কোনো নার্স এই ক্যানোলা করেছে আমরা জানি না। বাচ্চাটির যেহেতু সমস্যা দেখা দিয়েছিল তাদের উচিত ছিল আমাদের কাছে আসা। কিন্তু তারা আসেনি।' বারৈচা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা ডাক্তার সিফাত উলস্নাহ বলেন, 'শিশুটি আমার কাছে চিকিৎসা করিয়েছে এটা সত্য। নিউমোনিয়া হওয়ায় শিশুটির পায়ে ক্যানোলা করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো নার্স ক্যানোলা করেছে এটা আমার জানা নেই।' বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সৈয়দা তানজিনা আফরিন জানান, 'এ ব্যাপারে আমি এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।' বেলাবো উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্ম্‌দ নাজমুল হাসান বলেন, 'আমরা মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। শিগগিরই উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে ওই হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করব।'