ঈদ আনন্দ নেই জলদসু্যদের হাতে জিম্মি নাবিক নাজমুলের পরিবারে

প্রকাশ | ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
আর দুইদিন পরই মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদ উৎসবে প্রিয়জনের জন্য কেনাকাটা করতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন মার্কেটে ছুটছেন ক্রেতারা। পরিবারের সবাই অপেক্ষা করছে সেই দিনটির জন্য। তবে, ভারতীয় মহাসাগরে জলসদু্যদের হাতে জিম্বি নাবিক সিরাজগঞ্জের নাজমুল হকের পরিবার অপেক্ষায় আছে কখন জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে আসবে মা-বাবার বুকে প্রিয় সন্তান নাজমুল। রোববার জিম্মি নাজমুল হকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদকে সামনে রেখে তাদের পরিবারে নেই কোনো ধরনের কেনাকাটা। নেই ভালো কিছু রান্নার প্রস্তুতিও। অন্যবারের ঈদগুলো হাসি-খুশিতে কাটলেও এবার ঈদ তাদের কাছে নীরব কান্না। একই সঙ্গে বয়ে বেড়াচ্ছে শঙ্কা ও প্রতীক্ষা। পরিবারের উপার্জনশীল প্রিয় ব্যক্তি বন্দিদশায় মহাসাগরে তলিয়ে গেছে তাদের ঈদ আনন্দ। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঈদুল ফিতরের আগেই ২৩ নাবিকের মুক্তির আকুতি জানিয়েছেন নাজমুলের স্বজনরা। জলদসু্যদের হাতে জিম্মি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চর-নূরনগর গ্রামের আবু শ্যামা ও নার্গিস দম্পতির একমাত্র ছেলে নাজমুল হক। প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, নাজমুলের বয়স মাত্র ২৩ বছর। দুই ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড়। মাত্র ২০ বছর বয়সেই জাহাজে চাকরি পাওয়ার সুবাদে পরিবারের মুখে ফুটেছিল হাসি। কিন্তু গত ১২ মার্চ অপহৃত হওয়ার পর থেকেই ছেলের মুক্তির সংবাদের প্রতীক্ষায় সময় পার করছেন নাজমুলের মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা। তাদের সন্তান ফিরে পেতে আলস্নাহর দরবারে নামাজ, রোজা ও দোয়া করে সময় পার করছেন তারা। দিন-রাত ছেলের ছবি এবং মোবাইলে কোনো সংবাদ এলো কিনা, তা দেখছেন তারা। অপহৃতের পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ বাবা। কান্না ও আহাজারিতে রাত-দিন পার হচ্ছে মা নার্গিস ও বোন নাজমার। একই কোম্পানিতে নাবিক পদে চাকরি পাওয়া নাজমুলের ফুফাতো ভাই আল-মাহমুদ বলেন, ঈদের আগেই যেন আমার ভাইসহ সব নাবিকদের মুক্তির ব্যবস্থা করে সরকার, সেই দাবি জানাই। কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীন সুলতানা বলেন, জলদসু্যদের হাতে জিম্মি হওয়ার পর থেকেই জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তাদের পরিবারের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি। অপহৃত নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে সরকার ও জাহাজ মালিকের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা চলছে। পরিবারের একমাত্র ছেলে নিখোঁজ থাকলে তাদের তো আসলে ঈদ বলতে কিছুই থাকে না। এরপরও আমরা তাদের পাশে আছি। আগামী সপ্তাহে নাজমুলের পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।