ত্রিশ রোজা পুরো হলে আগামী বৃহস্পতিবার উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ উদযাপনের লক্ষ্যে সবাই আনন্দের সঙ্গে কেনাকাটায় ব্যস্ত। তবে কেনাকাটায় আনন্দ নেই সারাদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী পরিবারের মধ্যে। তাদের মার্চ মাসের বেতন, ঈদের বোনাস, বৈশাখী ভাতা কোনোটাই ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারছেন না। ফলে আর্থিক সংকটের কারণে সন্তান বা পরিবারের জন্য কেনাকাটাও করতে পারেননি। এতে সারাদেশে এমপিওভুক্ত স্কুল শিক্ষক, কলেজ শিক্ষক ও মাদ্রাসা শিক্ষক পরিবারের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি চিঠিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের বেতন, ঈদ বোনাস ও বৈশাখাী ভাতার টাকা নির্ধারিত ব্যাংকগুলোতে চেকের মাধ্যমে হস্তান্তরের বর্তমান মাসের গত ১ তারিখ নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী টাকা উত্তোলনের সর্বশেষ তারিখ দেওয়া হয় আগামী ৯ মার্চ পর্যন্ত। ব্যাংকে নির্দেশনা আসা সাপেক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা শুধু বেতনের বিল তৈরি করে নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে পারছেন। আর ঈদ বোনাস ও বৈশাখী ভাতার টাকার নির্দেশনা না আসায় এখনো বিল প্রস্তুত করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধানরা। এর মধ্যে গত ৫ ও ৬ মার্চ শুক্র, শনিবার বন্ধ এবং ৭ মার্চ শবে কদরের সরকারি বন্ধ থাকায় তিন দিনের পেছনে পড়তে হয়েছে সব প্রক্রিয়ার। এ অবস্থায় ঈদের আগে মাত্র দুই দিনে বিল প্রস্তুত, জমা, পোস্টিং, উত্তোলন যেমন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে, তেমনি কিছুটা অনিশ্চয়তার মধ্যেও রয়েছে। তাছাড়া একদিনে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে শিক্ষকদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সর্বশেষে সব প্রক্রিয়া শেষ করে টাকা হাতে পেলেও কেনাকাটার আর সময়ও থাকবে না। এ অবস্থায় সারাদেশের সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষাধিক এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর পরিবারে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মচারীরা বেতন, বোনাস, বৈশাখী ভাতা উত্তোলন করে পরিবারের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করছেন। অথচ আমরা আমাদের সন্তান, পরিবারের জন্য কোনো কেনাকাটা করতে পারছি না। স্মার্ট বাংলাদেশ বলে সর্বত্র জোরালো প্রচারণা চালানো হলেও এই স্মার্ট বাংলাদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ১ তারিখ বেতন ছাড় হলে ৯ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। তারা আবেদন করেন ঈদের সময় বিশেষ বিবেচনায় বেতন ও বোনাসের টাকা নির্ধারিত সময়ের আগেই উত্তোলনের নির্দেশনা দেওয়ার।