গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসা জামাইকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে, যশোরের মণিরামপুরে পানিতে ডুবে দুই ভাই-বোনের মৃতু্য ও মেহেরপুরের গাংনীতে নববধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়া প্রতিনিধি জানান, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসা জামাই বিলস্নাল গাজীকে (৪০) পিটিয়ে হত্যা করেছে জামাতার প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত আলমগীরের স্ত্রী যুথি আক্তারসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার গভীর রাতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী ইউনিয়নের চর কুশলী গ্রামে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। রোববার টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি আমিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত বিলস্নাল গাজী পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার গাবগাছিয়া গ্রামের মোখলেস গাজীর ছেলে।
ওসি আমিনুর বলেন, প্রায় ৭ বছর আগে টুঙ্গিপাড়ার চর কুশলী গ্রামের সরোয়ার মোলস্না নামে এক ব্যক্তি নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় সরোয়ারের পরিবারের লোকজন নিহত বিলস্নাল গাজী ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করেন। এ ঘটনায় নিহত বিলস্নাল শেখ স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করছিলেন।
তিনি আরও জানান, প্রায় এক মাস আগে বিলস্নাল দেশে এসে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে টুঙ্গিপাড়ার চরকুশলী গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে নিখোঁজ সরোয়ার মোলস্নার লোকজন সিআইডিকে খবর দিলে বিলস্নালের শ্বশুরবাড়ি গিয়ে তাকে খুঁজে না পেয়ে ফিরে যায় সিআইজির একটি দল।
পরে বাদী পক্ষের আলমগীরসহ তার লোকজন রাত ২টার দিকে বেলস্নালের শ্বশুরবাড়ির পাশের কলাবাগানের মধ্যে তাকে খুঁজে পেয়ে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে তারা বিলস্নালকে আলমগীর শেখের বাড়িতে ধরে নিয়ে এসে আবারো মারধর করলে ঘটনাস্থলেই বিলস্নালের মৃতু্য হয়।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ-২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত আলমগীরের স্ত্রী যুথি আক্তারসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানান, যশোরের মণিরামপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই ভাই-বোনের মর্মান্তিক মৃতু্য হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার বারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া দুই শিশু হলো- বারপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম মাস্টারের মেয়ে সামিয়া (৪) ও ছেলে সাবিদ (৩)। মৃতু্যর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মণিরামপুর থানার ওসি এবিএম মেহেদী মাসুদ।
স্থানীয়রা জানান, সামিয়া ও সাবিত সকালে বাড়ির পাশে খেলতে থাকে। অনেকক্ষণ দুই শিশুকে দেখতে না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এক পর্যায়ে দুপুরে ২টার দিকে বসতঘরের পাশে পুকুরের পানিতে তাদের নিথর দেহ ভাসতে দেখে পরিবারের লোকজন।
গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুরের গাংনীর ঢেপা গ্রাম থেকে টুম্পা খাতুন (১৮) নামের এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে টুম্পার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় টুম্পার স্বামী সাঈদ হোসেন ও শশুর মিঠু হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। টুম্পা আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে তা নিশ্চিত নয় পুলিশ।
জানা গেছে, ছয় মাস আগে ওই গ্রামের রাজমিস্ত্রি সাঈদ হোসেনের সঙ্গে মেহেরপুর সদর উপজেলার দফরপুর গ্রামের পিন্টুর মেয়ে টম্পা খাতুনের বিয়ে হয়। শনিবার তারা ঈদের বাজার করেন। মধ্যরাতে টুম্পা ঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস নেন। কী কারণে ফাঁস নিয়েছেন তা জানাতে পারেনি টুম্পার স্বামীর পরিবারের লোকজন।
গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, থানায় অপমৃতু্য মামলা রুজু সাপেক্ষে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।