গাংনীতে কসাই সিন্ডিকেট ভাঙতে এবার সমিতি গঠন
প্রকাশ | ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
এবার সোচ্চার হয়েছে সাধারণ জনতা। কসাইদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মেহেরপুরের মহলস্নায় মহলস্নায় গড়ে উঠেছে সমিতি। দৈনিক, সাপ্তাহিক অথবা মাসিক কিস্তিতে চাঁদা তুলে তা দিয়ে গরু কিনছেন সমিতির লোকজন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরু জবাই করে গোস্ত ভাগাভাগি করবেন তারা। এতে যেমন সাশ্রয়ী হবেন সাধারণ লোকজন তেমনি চাপ পড়বে কসাইদের ওপর। সমিতির বিষয়টি ভালোভাবে দেখছেন সচেতন মহল ও স্বয়ং হাটমালিক।
জানা গেছে, রমজান মাসের আগ থেকেই ছিল দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি। ক্রেতা সাধারণের সুবিধার্থে সরকার গোমাংসের দাম ৬৮০ টাকা নির্ধারণ করলেও কসাই সিন্ডিকেট তা প্রত্যাখান করে। বাজারে গো-মাংসের দাম সাড়ে সাতশ' টাকা কেজি। তবে ঈদের আগে ও পরে দাম আটশ' টাকা থেকে ১০০০ টাকা নির্ধারণ করতে পারেন কসাইরা। কসাই সিন্ডিকেট ভাঙতে মহলস্নায় মহলস্নায় সমিতি গঠন করে নিজেরাই গরু কিনে জবাই করার সিদ্ধান্ত নেন লোকজন। এতে সাশ্রয়ী দামে মাংস পাবেন তারা। তাছাড়া কসাইদের ওপর বেশ চাপ পড়বে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
জেলার বৃহত্তম পশুহাট বামন্দীতে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন মহলস্না থেকে সমিতি গঠন করে লোকজন আসছেন গরু কিনতে। গাংনী ভিটাপাড়ার মকলেছুর রহমান জানান, কসাইরা নানাভাবে জিম্মি করে ফেলেছে সাধারণ মানুষকে। চড়া দামে গোস্ত কিনতে হয়। তাছাড়া কসাইরা ইচ্ছেমতো মাংস বিক্রি করে। সাশ্রয়ী দামে মাংস পেতে সমিতি গঠন করা হয়েছে। এতে যেমন পছন্দমতো গোস্ত পাওয়া যাবে, তেমনি সাশ্রয়ী হবে। কসাইদের ওপরও অনেকটা চাপ পড়বে। একই কথা জানালেন গাংনীর মালসাদহ গ্রামের আফজাল হোসেন।
গরু কিনতে আসা কুষ্টিয়া সদরপুরের রাজ্জাক ও মাসুদ রানা জানান, কসাইদের কাছ থেকে তারা গোস্ত কেনেন না তিন বছর ধরে। প্রতিটি উৎসবে কসাইরা বেপরোয়াভাবে দাম হাঁকে। বাধ্য হয়ে ৩০ জনের একটি সমিতি গঠন করেছেন। সাপ্তাহিক চাঁদা তুলে গরু কিনতে আসেন। দেখে শুনে বুঝে পছন্দের পশুটি কিনেছেন। এতে অনেক সাশ্রয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
গরু বিক্রেতা গাড়াবাড়িয়ার আমিরুল ইসলাম জানান, তিনি নিজের বাড়ির গরু এনেছেন হাটে। কয়েকহাট আগে গরুর যা দাম ছিল এখন তার চেয়ে অনেক কম। তবে কসাই সিন্ডিকেট ভাঙতে যে সমিতি গঠন করা হয়েছে এটাকে সাধুবাদ জানালেন এই গরু বিক্রেতা। একই কথা জানালেন গরু ব্যবসায়ী কামারখালির আনোয়ার ও সহড়াবাড়িয়ার আশরাফুল।
জেলার ঐতিহ্যবাহী বামন্দী পশুহাটের ইজারাদার সিরাজুল ইসলাম জানান, ঈদের আগেই জমে উঠেছে পশুহাট। বেচা বিক্রিও বেশ ভালো। এবার জনগণ অনেকটা সচেতন। বিভিন্ন গ্রাম মহলস্না থেকে লোকজন আসছেন দলবদ্ধভাবে। পশু পালনকারীরাও ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন।