বরগুনার আমতলী উপজেলায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্থান সংকলন না হওয়ায় রোগীদের বারান্দায় বেড দেওয়া হয়েছে। ধারণক্ষমতার চেয়ে পাঁচগুণ রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে। ৬ জনের বেডে ৩০ জনের চিকিৎসা চলছে। এতে রোগীদের সমস্যা হচ্ছে। দ্রম্নত বেড বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন রোগী ও তার স্বজনরা। অপরদিকে আইভি স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে। রোগীদের ফার্মেসি থেকে আইভি স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ডায়েরিয়া আক্রান্ত হয়ে শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবিকাদের রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হাসপাতালের ৬ শয্যার ডায়েরিয়া রোগীর বেডের স্থলে ৩০ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের বারান্দায় রোগীদের বেড দেওয়া হয়েছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ও কলেরা স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে না। বাইর থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে এবং হাসপাতালের বারান্দায় বেড দেওয়া হয়েছে। এতে রোগীদের সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তারা। এছাড়া শত শত রোগী কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে অধিকাংশ রোগী পায়রা নদীসংলগ্ন এলাকার বলে জানা গেছে। লবণাক্ত পানি ব্যবহারেই ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স ঘুরে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে বারান্দার বেডে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালে বেডে ১১ জন এবং বারান্দায় ১৯ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে।
ডায়রিয়া আক্রান্ত আমড়াগাছিয়া গ্রামের খাদিজা বেগম বলেন, হাসপাতাল থেকে অ্যান্টিবায়েটিক ও স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে, তার পরও বাইর থেকে ওষুধ কিনতে হয়।
তিনি আরও বলেন, বেড না থাকায় বারান্দায় বেড পেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। দ্রম্নত হাসপাতালে বেড বাড়ানো প্রয়োজন।
চাওড়া পাতাকাটা গ্রামের সাজেদা আক্তারের স্বামী জসিম উদ্দিন বলেন, দুই দিন আগে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। হাসপাতাল থেকে কিছুই দিচ্ছে না।
চাওড়া ইউনিয়নের ডাক্তারবাড়ী এলাকার জাহেদা বেগমের স্বজন বলেন, হাসপাতালে স্যালাইন নেই। স্যালাইন বাইর থেকে কিনতে হচ্ছে।
আমতলী পৌরসভার বটতলা এলাকার শিশু রোগী রেদওয়ানের স্বজন বলেন, হাসপাতাল থেকে কিছুই দেয়নি। সব কিছু বাইর থেকে কিনতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে বেড না থাকায় বাইরের বেডে ছেলেকে নিয়ে থাকছি। এতে সমস্যা হচ্ছে। হাসপাতালে আরো ডায়েরিয়া বেড বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
কুকুয়া গ্রামে ৭০ বছর বয়সি রুপশা বেগম বলেন, 'ওরে বাবা আলস্নায় মোরে বাঁচাইবে কিনা হেইয়্যা কইতে পারি না। মুইএ্যাকছের বায়রায় যাই।'
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মুনয়েম সাদ বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এছাড়া পায়রা নদী সংলগ্ন এলাকায় রোগীদের সংখ্যা অনেক বেশি। ধারণা করা হচ্ছে নদীর লবণ পানি ব্যবহারের ফলে এ রোগের প্রভাব দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আইভি স্যালাইন সরবরাহ অব্যাহত আছে। তবে আরও স্যালাইনে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। দ্রম্নত ওই স্যালাইন পেয়ে যাব। ডায়েরিয়া রোগী সামাল দিতে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।