তিন জেলার অটোরিকশা অবৈধভাবে চলছে চাঁদপুরে
প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিবন্ধন ছাড়া কি পরিমাণ এর কোনো সঠিক তথ্য নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে কুমিলস্না, লক্ষ্ণীপুর ও নোয়াখালী জেলার নিবন্ধিত বহু অটোরিকশা জেলার কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় অহরহ চলছে। যার ফলে সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি অনেক সময় অবৈধ অটোরিকশা করে নানা অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত হচ্ছে।
সরেজমিন এসব এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলায় অনেক সময় চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব কাজে জেলার বাহিরের অটোরিকশা ব্যবহার হয়। এছাড়া শাহরাস্তির কালিয়াপাড়া ও দোয়াভাঙ্গা এলাকায় বাহিরের জেরার বহু সংখ্যক অটোরিকশা যাত্রী পরিবহণ করছে। অবৈধ ও বাহিরের জেলার অটোরিকশা চলাচল করার সুযোগ করে দিচ্ছে শাহরাস্তির আবুল নামে শ্রমিক নেতা। তিনি এর বিনিময়ে প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা উঠানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
কালিয়া পাড়ার অটোরিকশা চালক আলাউদ্দিন জানান, কালিয়াপাড়া থেকে কচুয়া পর্যন্ত তিনি অটোরিকশা চালান। তার অটোরিকশা কুমিলস্না জেলার নিবন্ধিত। এর জন্য তাকে মাসিক দিতে হয় এবং প্রতিদিন পৌরসভাকে টোল দিতে হয় ৪০ টাকা।
দোয়াভাঙ্গা ও কালিয়াপাড়া থেকে অটোরিকশায় যাত্রী পরিবহণ করেন চালক রবিউল। তিনি বলেন, কুমিলস্না, লক্ষ্ণীপুর ও নোয়াখালী জেলার নিবন্ধিনত বহু গাড়ি চলে। তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছু বলে না।
অটোরিকশা শ্রমিক নেতা আবুল বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চললে ক্ষতি কি? বড় গাড়িই চলে। সেগুলোর বিষয়ে কেউ কথা বলে না। অন্য জেলার গাড়ি চাঁদপুরে চলে কেন এটার উত্তর দিবে পুলিশ সুপার। পৌরসভাগুলোতে কমপক্ষে ৩০ হাজার অটোরিকশা চলে। সেখানে টাকা উত্তোলন হলেও মেয়রদের সঙ্গে কেউ কথা বলে না।
বিআরটিএ চাঁদপুরের মোটরযান পরিদর্শক আফজাল হোসেন বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিবন্ধন ছাড়া ভালো চলে। সব জেলায় যেতে পারে। কারণ এক সময় নিবন্ধনের জন্য আমাদের কাছে তারা এসেছে। নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর তারা আসেন না। বিআরটিএ চাঁদপুর জেলার সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) আব্দুলস্নাহ আল মামুন বলেন, চাঁদপুর জেলায় শুরু থেকে নিবন্ধন হওয়া অটোরিকশার সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ১০১টি। পরে পুনরায় নিবন্ধন হওয়ার পর সর্বশেষ নিবন্ধন নম্বর হচ্ছে ৮ হাজার ২২৭। অবৈধ অটোরিকশা কি পরিমাণ তার সঠিক তথ্য নেই। তবে কয়েক হাজার হবে। আর সীমান্ত উপজেলায় মাঝেমধ্যে প্রশাসনের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়। এটি অব্যাহত আছে।
শাহরাস্তির (টিআই) কামরুল হাসান বলেন, সীমান্ত উপজেলায় আমি একা দায়িত্ব পালন করছি। অন্য জেলার গাড়ি অনেক সময় রোগী নিয়ে মতলব ডায়েরিয়া হাসপাতালে যায়। এছাড়া যাত্রী পরিবহণ করে তাও সঠিক। এসব গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দিতে হলে কচুয়া ও শাহরাস্তি থানায় যেতে হয়।
অন্য জেলার অটোরিকশা চাঁদপুরের কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় যাত্রী পরিবহণ করে। বিষয়টি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে তার কার্যালয়ে গিয়ে জানানো হয়। তিনি বলেন, ট্রাফিকে আমাদের লোকবল কম। এরপর যে পরিমাণ আছে তারা শহর কেন্দ্রিক দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শহরেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আপাতত উপজেলাগুলোতে লোকবল দেওয়া কিংবা কাজ করা যাচ্ছে না। ট্রাফিকে লোকবল বাড়লে তখন কাজ করতে পারবে।