বিআরটিএ'র সিদ্ধান্ত
ঈদের পর রাজধানীতে আর রংচটা বাস নয়
প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
আসন্ন ঈদুল ফিতরের পরে ঢাকার সড়কে কোনো রং উঠে যাওয়া বা রংচটা বাস চলাচল করতে পারবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। একই সঙ্গে রাজধানীর সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতিকে নিয়ে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। তবে বাস মালিকরা কথা দিয়েছেন, এপ্রিলের মধ্যে ২০ শতাংশ বাস রং করা হবে। বাকিটা ধাপে ধাপে সম্পন্ন করবেন।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ ভবনে 'ফিটনেসবিহীন, বায়ু দূষণকারী ও রুট পারমিটবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধকরণ সংক্রান্ত সভা'য় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের সভাপতিত্বে এই সভায় অংশ নেন ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির নেতারা।
সভায় নূর মোহাম্মদ মজুমদার পরিবহণ মালিকদের উদ্দেশে বলেন, আগামী ৩১ মে তারিখের পর ঢাকার রাস্তায় কোনো ধরনের রং উঠা বাস চলতে দেওয়া হবে না। আমরা এর জন্য অভিযানে বের হব। আশা করব, মালিকরা নিজ উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন বাস উপহার দেবেন। আমরা পুরো বিষয়টি মনিটর করব।
এর আগে গত রোববার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহণের কালো ধোঁয়া এবং উন্মুক্ত স্থানে নির্মাণ সামগ্রী না রাখা এবং বায়োম্যাস বর্জ্য পোড়ানো বন্ধের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছিলেন, বায়ুদূষণ রোধে ২০ বছরের বেশি পুরনো বাস রাজধানীতে চলতে দেওয়া হবে না।
মন্ত্রী নির্দেশ দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ ৮ এপ্রিলের মধ্যে ঢাকা শহরে চলাচলকারী এ রকম পুরনো বাসের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। আর পরিবহণ মালিক সমিতি ২০ এপ্রিলের মধ্যে ২০ বছরের অধিক বয়সি বাস তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া পুরাতন যানবাহন পুরোপুরি নিয়ম মেনে স্ক্র্যাপ করতে হবে।
সভায় বিআরটিএ থেকে জানানো হয় রাজধানীতে ৩৯টি কোম্পানির ৫২৮টি ফিটনেসবিহীন গাড়ি ছিল, এর মধ্যে ২৫৭টি ঠিক করা হয়েছে। তবে এ তালিকা পূর্ণাঙ্গ আকারে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার তাগিদ রয়েছে বিআরটিএর। আগামী ৩০ মে'র মধ্যে ঢাকার সড়কে চলাচলকারী সব বাস-মিনিবাসের তালিকা ও মালিকদের নাম বিআরটিএ-তে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ।
তবে বাস মালিকদের বক্তব্য দ্রম্নত সময়ে গাড়িগুলোর ফিটনেস ঠিক করা কঠিন হবে। তাদের দাবি, ঢাকার ৬০ শতাংশ বাস মালিকের আর্থিক সচ্ছলতা নেই যে দ্রম্নত সময়ের মধ্যে গাড়ি ঠিক করে রাস্তায় নামাবেন। কেননা এই মালিকদের অধিকাংশ একটি-দুটি পুরনো বাস কিনেই মালিক হয়েছেন। এদের কেউ কেউ গাড়ির মেকানিক থেকে, কেউ আবার বাসচালক থেকে বাস মালিক হয়েছেন।
ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির হিসাবে দেখিয়ে তারা বলেন, ঢাকার সড়কে এখন সাড়ে ৩ হাজার বাস-মিনিবাস যাত্রী পরিবহণ করছে যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এখন পুরোপুরি ফিটনেস ঠিক করা পর্যন্ত যদি ১ থেকে দেড় হাজার গাড়ি যদি বসিয়ে রাখা হয় তবে নগরে গণপরিবহণ সংকট তীব্র হবে। মালিকদেরও ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হবে।
তবে দ্রম্নত সময়ের মধ্যে ঢাকার বাসগুলো সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে জানিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, রাস্তায় যেন রঙ উঠা গাড়ি চলতে না পারে সে বিষয়ে ঈদুল ফিতরের পরে সমিতির জোনাল অফিসগুলো থেকে গাড়িগুলোর মনিটরিং বাড়ানো হবে। ভাঙাচোরা গাড়িগুলোর মালিকদের ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে। তারপরেও কেউ সড়ক এসব বাস নামালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হবে।