লাইটিং ফাঁদে প্রতারণা
দোকান থেকে বের হতেই বদলে যাচ্ছে কাপড়ের রং
প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি
আলোকসজ্জায় রাঙানো হয় পুঠিয়াসহ রাজশাহীর সব দোকান ও মার্কেট। আর এসব মার্কেটের বেশকিছু পোশাকের দোকান লাল-নীল বাল্ব দিয়ে লাইটিং করা হয়ে থাকে। চোখ ধাঁধানো এই রঙিন লাইটের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে প্রতারণার ফাঁদ। এই রঙিন আলোর ফলে বোঝা যায় না পোশাকের আসল রং এবং কোয়ালিটি। নিম্নমানের পোশাকও উন্নতমানের পোশাকের মতো চকচকে উজ্জ্বল দেখায়। এতে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতা।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, এসব অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজশাহী শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় আলোকসজ্জার মধ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে সব মার্কেট ও দোকান। বিশেষ করে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে এসব লাইটিং বেশি চোখে পড়ে। এসব মার্কেটে থাকা বেশকিছু বিপণী বিতানে সাদা লাইটের পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে লাল এবং নীল লাইট। মার্কেটের বড় দোকানগুলোতে রঙিন লাইটের ব্যবহার কম দেখা গেলেও ছোট দোকানগুলোতে অহরহ। এছাড়া এসব লাইটের বেশি ব্যবহার দেখা যায় শিশু, থ্রিপিস ও জেন্টস আইটেমের দোকানে।
জানা যায়, চোখ ধাঁধানো এসব রঙিন লাইটের উজ্জ্বল আলোতে পোশাকের আসল রং বোঝা যায় না। এতে ধূসর রঙের কাপড়ও চকচকে উজ্জ্বল দেখায়। মূলত নিম্নমানের কাপড় উন্নতমানের দেখাতে এই ফাঁদ পাতা হয় বলে জানান ক্রেতারা।
আব্দুল মমিন নামের একজন জানান, 'এই প্রতারণা একবার আমার সঙ্গে হয়েছিল। দোকান থেকে কিনেছিল নেভি বস্নু রঙের শার্ট। কিন্তু বাসায় গিয়ে দেখি ফুল নেভি বস্নু রঙের না, লাইটিংয়ের কালারের জন্য উজ্জ্বল নেভি বস্নু মনে হচ্ছে এবং খুব সুন্দর লাগছিল।'
মাহমুদা নামে এক মেয়ে জানান, 'এই ফাঁদে পড়ে থ্রি পিস কিনে ঠকেছি। উজ্জ্বল আর চাকচিক্যের কারণে নিম্নমানের কম দামি পোশাক কিনেছি বেশি দাম দিয়ে। সেই থেকে এ ধরনের লাইটিং দোকান এড়িয়ে চলি। বিক্রেতাদের অনেকে দোকানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এই ধরনের লাইটিং করা হয়েছে বললেও কয়েকজন বিক্রেতা স্বীকার করেছেন এ ফাঁদের কথা। পুঠিয়ার বানেশ্বরের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জানান, ক্রেতাদের এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা না। কালার লাইটিং করার ফলে তাড়াতাড়ি পছন্দ করে, তাই পোশাকের রঙ ও মান লুকাতে সবাই রঙিন লাইট ব্যবহার করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক পোশাক বিক্রেতা জানান, এসব অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে ভালো ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সবাই যখন করেছে তাই আমিও লাইটিং করেছি। তা না হলে আমার দোকানে ক্রেতা কম আসছে। তারা মূলত নিম্নমানের কম দামি কাপড় ভালো মানের বলে বেশি দামে বিক্রির জন্য এই কাজ করে।
এই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।