বাবা ইট ভাঙা শ্রমিক। কাজ করে যা রোজগার হয় তা দিয়েই কোনো রকম চলে তাদের সংসার। এ যেন নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তার ওপর সামনে আসছে ঈদ। সারাবছর যেমন করে কাটুক না কেন ঈদের খুশি সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতেই হবে। তাই রমজানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ সময় অসচ্ছল পরিবারে অর্থের জোগান দিতে বাবার সঙ্গে ইট ভাঙা কাজের শ্রমিক হিসেবে নেমে পড়েন তিন শিক্ষার্থী।
গত রোববার দুপুরে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার উপজেলা পরিষদ রোড সংলগ্ন এলাকায় ইট ভাঙতে দেখা যায় তিন শিক্ষার্থীকে। এ সময় ইট ভাঙা শ্রমিকের কাজ করছিল শিশু মহি উদ্দিন (৮), আবু হানিফ (৭) ও মাহফুজ মিয়া (৮)। এতে তাদের প্রতিদিন আয় হয় ৮০ থেকে একশ' টাকা।
সরেজমিন দেখা যায়, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের সব শক্তি দিয়ে ইট ভাঙছে তারা। এ সময় মহি উদ্দিন জানায়, সে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা কমপেস্নক্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবা ইটা ভাঙা শ্রমিকের কাজ করেন। যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকম জীবিকা নির্বাহ করে আসছে তাদের পরিবার। তাই সে বাবার সঙ্গে পরিবারের চাহিদা মেটাতে ইট ভাঙার কাজ করছে।
মহিউদ্দিন আরও জানায়, তাদের অভাব-অনটনের সংসার। সামনে আসছে ঈদুল ফিতর, পরিবারের সব সদস্যের জন্য নতুন কাপড় কেনা ও চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তার বাবা মোসন মিয়ার সঙ্গে ইট ভাঙা শ্রমিকের কাজ করছে। এতে তার আয় হয় ৮০ থেকে একশ' টাকার মতো। ঈদের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে সে স্কুলে যাবে।
ওই বিদ্যালয়ের একই ক্লাসের আরও দুই শিক্ষার্থী আবু হানিফ ও মাহফুজ মিয়া ইটা ভাঙা শ্রমিকের কাজ করছিল। তারা জানায়- স্কুল বন্ধ তাই তারা বাবার সঙ্গে কাজে এসেছে। ইট ভাঙা শ্রমিকের কাজ করে যে টাকা আয় হয় সেই টাকা তারা তাদের বাবার কাছে দিয়ে দেয় পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মেটানোর জন্য।