রাজস্থলীতে বেড়েছে কলা ও লেবুর দাম
প্রকাশ | ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
রাজস্থলীর (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাজারগুলোতে কলা আর লেবুর ব্যাপক আমদানি রয়েছে। বাজারভর্তি কলা আর লেবু। রমজান মাসে চাহিদা থাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদেরও ছড়াছড়ি। এরপরও অন্য খাদ্যপণ্যের মতো দাম বাড়ছে লেবু ও কলার। এখানেও সিন্ডিকেট নয়ত এমন প্রশ্ন ক্রেতাদের।
বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কলার কোনো ঘাটতি নেই। রমজান মাসে ব্যাপক চাহিদা থাকায় স্থানীয় উৎপাদিত কলা সাপ্তাহিক তিন দিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা জাতের কলা আসছে রাজস্থলীর ইসলামপুর, বাঙ্গালহালিয়া ও রাজস্থলী বাজারে। তবে এই সময় লেবুর উৎপাদন কিছুটা কম হলেও চাহিদানুযায়ী ছোট-বড় নানা জাতের পর্যাপ্ত লেবু মিলছে বাজারে। কিন্তু হঠাৎ করে রমজানের শুরুতেই কলা ও লেবুর দাম বেড়েছে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণের চেয়েও বেশি। বিক্রেতারা যে যার মতো দরে তা বিক্রি করছেন।
উপজেলার হাটবাজারে চওড়া দাম নিয়ে প্রায়ই ক্রেতা-বিক্রেতার বাক-বিতন্ডা লক্ষণীয়। ভৌগোলিক কারণে পাহাড়ি উঁচু উঁচু টিলাবেষ্টিত রাজস্থলী উপজেলাজুড়ে কলা ও নানা জাতের লেবু উৎপাদন হয়। কলা ব্যাপক পরিসরে উৎপাদন হলেও পাশাপাশি রাঙামাটির রাজস্থলীর পাহাড়ি এলাকাগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের লেবু দেশের চাহিদার জোগান দিয়ে বিদেশে রপ্তানি হয়।
বিক্রেতারা জানান, রমজান মাস এলেই লেবুর চাহিদা বাড়ে। এ কারণে লোকসানে থাকা অনেক চাষি বছরের এই সময়টার অপেক্ষায় থাকেন। তারা লেবু গাছের বাড়তি খরচ দিয়ে পরিচর্যা করেন। কারণ, এই সময়টাতে গাছে কম ফলন আসে। তাই রমজানের শুরু থেকেই লেবুর দাম এক লাফেই দ্বিগুণ-তিনগুণ বেড়ে যায়। বেশি দর দিয়ে কিনতে হয়, তাই দর দিয়েই তা বিক্রি করেন।
রোববার দেখা গেল প্রতি হালি কাগজি লেবু ৬০ টাকা। কৃষকরা জানান, এখন লেবুর মৌসুম না থাকায় উৎপাদন কম। এ ছাড়া যে বাগানগুলোতে লেবু মিলছে, তারা বেশি ব্যয়ে পরিচর্যা করছেন। তাই কম দামে বিক্রি হলে তাদের লোকসান গুনতে হবে। এই কৃষি পণ্যের উৎপাদন রক্ষায় চাষিদের দাবি যদি মৌসুমে (বর্ষায়) সারা বছরের জন্য লেবু প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ করা যায়, তাহলে হঠাৎ বেশি দামে লেবু ক্রয় করতে হবে না।
এদিকে বাজার ঘুরে খুচরা কলা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল কলার উৎপাদনের ঘাটতি নেই। স্থানীয় উৎপাদিত কলা জেলার ঘিলাছড়ি, গাইন্দ্যা বাঙালহালিয়া থেকে আসা আধা কাঁচা ও পাকা কলার যথেষ্ট জোগান রয়েছে। তবে চাহিদানুযায়ী পাকা কলার জোগান দিতে কেবল বিশেষ পদ্ধতিতে পাকানোতে কিছুটা সমস্যা পোহাতে হয়। বিক্রেতারা রমজান উপলক্ষে হঠাৎ কলার দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেননি। পরিবহণ ও শ্রমিক ব্যয় বাড়ার অজুহাতে কলার দাম রমজানে দুই থেকে তিনগুণের বেশি বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ দোকানিদের খরচ কম থাকলেও তারাও স্থায়ী দোকানিদের সঙ্গে পালস্না দিয়ে বেশি দরে বিক্রি করছেন। কলাতেও সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর অভিযোগ ক্রেতাদের।
এ বিষয়ে ক্রেতারা ক্ষোভের সঙ্গে বলছেন, সব মিলিয়ে আমরা ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি। কারণে-অকারণে নানা অজুহাতে তারা অধিক মুনাফার আশায় দাম বাড়াচ্ছে। আর রমজান এলেই বাড়ে দাম বাড়ানোর প্রবণতা। তারা অভিযোগ করে বলছেন, বাজার মনিটরিং না থাকায় যে যার মতো করে মুনাফা লুটছেন।
এ বিষয়ে রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপজেলাজুড়ে প্রতিনিয়তই বাজার মনিটরিং করছি। অভিযান হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসব।