সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করায় প্রভাষকের শাস্তি দাবি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
  ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করায় প্রভাষকের শাস্তি দাবি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এক প্রভাষক কটূক্তি করায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ৩১ মার্চ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরারব দরখাস্ত দিয়ে ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন অত্র কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক মো. আতিয়ার রহমান। ঘটনাটি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা হারুন অর রশিদ ডিগ্রি কলেজের। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কুটূক্তিকারি বাংলা বিভাগের প্রভাষক আতাউরের কঠিন শাস্তি ও কলেজ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, ১৭ মার্চ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে পাটকেলঘাটা হারুন অর রশিদ ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস চত্বরের্ যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল গফ্‌ফার। প্রথমে তিনি তার স্বাগত বক্তব্য দিয়ে অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব দেন বাংলা বিষয়ের প্রভাষক (নন-এমপিও) মো. আতাউর রহমানকে। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- সমাজ কল্যাণ বিষয়ের প্রভাষক আনন্দ মোহন মন্ডল, রসায়ন বিষয়ের প্রভাষক শামীমা আক্তার, প্রভাষক রহিমা আক্তার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক মো. আতিয়ার রহমান। আতিয়ার রহমান তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকে আব্রাহাম লিংকন, লেনসন ম্যান্ডেলা, মহাত্মাগান্ধী ও উইনস্টোন চার্চিলের সঙ্গে তুলনামূলক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করে বঙ্গবন্ধুর শ্রেষ্ঠত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি একপর্যায়ে বলেন, স্বাধীনতা অর্র্জন করার চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময় দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলেন। তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে এ দেশে ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত অবাদ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে অংশ নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করে সেই স্বাধীনতাকে রক্ষা করেছেন। এই বক্তব্যে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন সঞ্চালক আতাউর রহমান। প্রকাশ্যে মাইক হাতে নিয়ে ক্ষিপ্ত কণ্ঠে সিনিয়র প্রভাষক আতিয়ার রহমানের ওই বক্তব্য কাউন্টার করে বক্তব্য সম্পর্কে কটূক্তি করেন। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মাঠের মধ্যে হৈ চৈ শুরু হয়। প্রভাষক আতিয়ার রহমান সরাসরি প্রতিবাদ করেন। মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টি তালা উপজেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানা না গেলেও পরে বিষয়টি তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলামকে শিক্ষকরা অবহিত করলে তিনি ১৯ মার্চ দুপুর ১২টায় কলেজে উপস্থিত হয়ে ঘটনাটি তদন্ত করেন। তদন্তে তার বক্তব্যের সত্যতা মেলে। এ সময় সব শিক্ষক-কর্মচারী ও সাংবাদিকদের সামনে আতাউর রহমান তার দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

বিষয়টি নিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল গফ্‌ফার বলেন, 'আমি অনেক আগে বিএনপি করতাম, এখন আমি আওয়ামী লীগ করি। অধ্যক্ষ পদে কোনো লোক পাওয়া যাচ্ছে না বলে আমি অধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছি। প্রভাষকের বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়ানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে যেভাবে বলা হচ্ছে, তিনি ওইভাবে বলেননি।'

কলেজের সিনিয়র প্রভাষক আতিয়ার রহমান বলেন, দীর্ঘ ১৩ দিনেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল গফ্‌ফার। যে কারণে বাধ্য হয়ে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হুমায়ুন কবিরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে