রমজান রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। আর রোজাদারদের ইফতার করানো একটা ইবাদত; যা সওয়াবের কাজ। তাই মনের আত্মতৃপ্তি আর সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করতে রমজান মাসজুড়ে ইফতারখানা খুলে বসেন রাজশাহীর মানবতার ফেরিওয়ালাখ্যাত আজিজুল আলম বেন্টু। যেখানে প্রতিদিন ব্যক্তিগত উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ৫০০ রোজাদারের জন্য ইফতার।
ঘড়ির কাঁটা যখন বেলা ৩টা তখন চুলায় জ্বলে উঠে খড়ির আগুন। হাঁড়িতে বসানো হয় গরুর মাংসের তেহেরি, যা খেয়ে ইফতার করবেন রোজাদাররা। আর হাত তুলে দোয়া করবেন ইফতারদাতার জন্য। তাতেই যেন প্রশান্তি খুঁজে পান রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আজিজুল আলম বেন্টু।
দীর্ঘ এক যুগ ধরে রমজান মাসজুড়ে ইফতারের এই কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন তিনি। তার ইফতারখানা ভেদাভেদ ভুলে ইফতার করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের ইফতারের পেস্নটে রাখা হয় খেজুর, কলা, শসা, জিলাপি, পেয়ারা, মালটা, তরমুজ, পেঁয়াজু, ছোলাভুনা, বেগুনি, তেহেরি এবং আমের জুস।
আজিজুল আলম বেন্টুর নিজ বাড়িতে তৈরি ইফতার ভাগ হয় তিন ভাগে। এক ভাগ যায় নগরীর হড়গ্রাম মুন্সীপাড়ায় বাড়ির পাশে মদিনার আদলে নিজের তৈরি বাইতুল আমিন জামে মসজিদে। তার ইফতারে এবার যোগ হয়েছে এই মসজিদটি। আর আরেক ভাগ পাঠানো হয় তার নিজের গড়া সামাজিক সংগঠন আমরা নতুন প্রজন্মের কার্যালয়ের মেহমানখানায় পথচারী মেহমানদের জন্য। আরেক ভাগ বাটিতে করে পাঠানো হয় পাড়ার মধ্যবৃত্তি পরিবারের বাড়ি বাড়ি।
ইফতার সামগ্রী তৈরি ও পরিবেশনে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে থাকেন 'আমরা নতুন প্রজন্ম'র তরুণ সদস্যরা। তাদের সঙ্গে নিজেও শ্রম দেন মানবতার এই ফেরিওয়ালা। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজ হাতে ইফতার তৈরি করেন আজিজুল আলম বেন্টুর সহধর্মিণী নাসিমা আলম লিপিও।
তিনি বলেন, মসজিদ ও মেহমানখানায় পরিবেশনের পাশাপাশি প্রতিদিন প্রায় ৪০ পরিবারে বাটিতে করে পৌঁছে দেওয়া হয় ইফতার। বিশেষ করে যাদের ইফতার কেনার সামর্থ্য নেই কিন্তু কাউকে বলতেও পারে না আবার কোথাও যেতেও পারে না। এ পরিবার খুঁজে বের করে তাদের বাড়িতে ইফতার পাঠানো হয়ে থাকে। আলস্নাহ তাদের দিয়ে এটা করাচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি।
আজিজুল আলম বেন্টু বলেন, ইফতারি একটা ইবাদত, যা সওয়াবের কাজ। নিজে রোজা করা এবং অন্যকে ইফতার করানো সমপরিমাণ সওয়াবের কথা বলা হয়েছে হাদিসে। সব মিলিয়ে এটা একটা ভালো কাজ আর ভালো কাজ করলে তো আত্মতৃপ্তি থাকেই।