পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে এবার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগের আশঙ্কা নেই। ২০২২ সালের ২৬ জুন পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দেশের দক্ষিমাঞ্চলের বেশির ভাগ যানবাহন এখন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরিতে পারাপার না হওয়ার কারণে ঘাটের গুরুত্ব অনেক কমে গেছে। এ নৌ-রুটে ফেরিতে যানবাহন কম পারাপার হওয়ায় ঘাট এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে না। এখন ঘাটে যানবাহন আসামাত্রই সরাসরি ফেরিতে নদী পারাপার হতে পারছেন। আগের মতো ঘাটে এসে নদী পারাপার হওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন বিআইডবিস্নউটিসির আরিচা অফিস সূত্রে জানা যায়, মাওয়া পদ্মা সেতু হওয়ার আগে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১ জেলার যাত্রী ও যানবাহন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটের ফেরিতে পারাপার হয়েছেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এখন কিন্তু আগের মতো সেই চাপ পাটুরিয়া ঘাটে নেই। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে ঈদের সময় গড়ে প্রতিদিন ছোট-বড় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার যানবাহন পারাপার করতে হয়েছে। কিন্ত পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর গত বছর প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার যানবাহন পারাপার হয়েছিল। এছাড়া গত বছর ঈদের সময় বিআইডবিস্নউটিসির কর্তৃপক্ষ ছোট-বড় ১৯টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করায় ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ঘাট এলাকায় এসে নদী পারাপারের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়নি। ঘাটে এসে সরাসরি ফেরিতে উঠে নদী পারাপার হয়েছেন। এবার ঈদ উপলক্ষে এ নৌ-রুটে ১৫টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের পারাপারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআইডবিস্নউটিসি কর্তৃপক্ষ। এ কারণে এবারও আসন্ন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগ না হওয়ার আশা করছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। এছাড়া এ নৌ-রুটে ফেরি চলাচলের জন্য নাব্যতাও স্বাভাবিক রয়েছে। ফেরি চলাচলেও কোনো সমস্যা হবে না।
আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম খান জানান, এ নৌ-রুটে ২১টি লঞ্চ দিয়ে কাটা লাইনের যাত্রীদের পারাপার করা হবে। এদিকে আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে গত বছর ঈদের সময় ফেরি স্বল্পতার কারণে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ঘাট এলাকায় এসে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। তবে এবারও ঈদের সময় ৫টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন করা হবে। এ কারণে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া ১২ লঞ্চ ও স্পিডবোট দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হবে। আরিচা ঘাটে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বেশি থাকলে এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ লঞ্চ ও স্পিডবোট মালিক এবং শ্রমিকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে গত বছরের মতো এবারও রাতে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল করলে নৌ-দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন বিআইডবিস্নউটিসির আরিচা অফিসের ডিজিএম খালেদ নেওয়াজ বলেন, এবার আসন্ন ঈদ উপলক্ষে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ১৫টি ফেরি ও আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে ৫ ফেরি দিয়ে যানবাহন ও ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের পারাপার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এবার ঘাট এলাকায় এসে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার যানবাহন পারাপার করতে হয়েছে। সেতু চালু হওয়ার পর গত বছর অর্ধেকের কম যানবাহন পারাপার হয়েছে এ নৌ-রুটে। পাটুরিয়ায় ৫টি ঘাটের মধ্যে ৪টি সচল রয়েছে।