পাঁচ বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ভারতীয় নাগরিক দীপক কুমারকে (৩৫) পরিবারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এবং ভারতের গেদে বন্দরের শূন্য রেখায় দু'দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী, ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও থানা পুলিশের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মানসিক ভারসাম্যহীন দীপক বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলা কারাগারে বন্দি ছিল প্রায় ৫ বছর। দীপকের কুমারের বাড়ি ভারতের বিহার রাজ্যের সামস্তীপুর জেলার মনিহারপুর গ্রামে।
বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে পিরোজপুর জেলা পুলিশের হাতে আটক হয় দীপক। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আদালতের মাধ্যমে তাকে পিরোজপুর জেলা কারাগাওে প্রেরণ করা হয়। সাজার মেয়াদ শেষ হলে ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর প্রত্যাবসনের জন্য সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এরপর ১৯ অক্টোবর দর্শনা বন্দরের চেকপোস্টে তাকে হস্তান্তরের জন্য নেওয়া হয়। কিন্তু দীপকের পরিবারের কেউ উপস্থিত না থাকার কারণে তাকে হস্তান্তর করা সম্ভব হয় না।
পরবর্তী সময়ে একাত্তর টিভির জ্যেষ্ঠ চিত্রসাংবাদিক ও অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল হুদার প্রচেষ্টায় দীপক কুমারের পরিবারের ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়। এরপর বৃহস্পতিবার দর্শনা বন্দরের চেকপোস্ট দিয়ে দীপক কুমারকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়।
হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চিত্রসাংবাদিক শামসুল হুদা, দীপক কুমারের বাবা রাম নরেশ ঠাকুর এবং দুলাভাই গৌরব কুমার উপস্থিত ছিলেন।
দীপক কুমারের বাবা রাম নরেশ ঠাকুর বলেন, 'আমি গরিব মানুষ। দীর্ঘদিন পর সবার প্রচেষ্টায় আমার পাগল ছেলেকে খুঁজে পেলাম। সবার কাছে কৃতজ্ঞ।'
হস্তান্তর অনুষ্ঠানের বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির দর্শনা আইসিপি কমান্ডার সুবেদার এনামুল কবির, দর্শনা ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই আতিক, কাস্টমস কর্মকর্তা জাহিদুজ্জামান, শরীফ উদ্দিন, দর্শনা থানার এসআই ফাহিম হোসেন, চেকপোস্টের এএসআই মোমিন প্রমুখ।
ভারতের পক্ষে ছিলেন ১৩২ বিএসএফ সীমানগর ব্যাটালিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর পি নাগা রঞ্জন, গেদে ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার এসি বিতাশী, গেদে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ জিসি দে, কাস্টমস কর্মকর্তা রামাতার পি যাদব, কৃষ্ণগঞ্জ থানার এএসআই তন্ময় দাস, ডিআইবি সাধন মন্ডল ও নব কুমার চক্রবর্তী, রেডক্রস প্রতিনিধি চিত্তরঞ্জন নাথ প্রমুখ।