মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সেমিপাকা বাড়ি পাচ্ছেন সাফ ফুটবল জয়িতা ইয়ারজান

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
  ২৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
সেমিপাকা বাড়ি পাচ্ছেন সাফ ফুটবল জয়িতা ইয়ারজান

অবশেষে কুঁড়েঘর থেকে সেমিপাকা বাড়ি পাচ্ছে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত খেলায় ভারতের বিপক্ষে টাইব্রেকারে বিজয় ছিনিয়ে আনার মূল কারিগর ইয়ারজানের পরিবার। পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের খোপড়াবান্দি গ্রামে ইয়ারজানের বাবা আব্দুর রাজ্জাকের ভাঙাচোড়া ঝুপরি ঘর ভেঙে সেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রায় চার লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক সুবিধা সংবলিত দুই কক্ষের সেমিপাকা ঘর। জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলামের উদ্যোগে ও নির্দেশনায় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাকির হোসেনের তত্ত্বাবধানে বাড়ির নির্মাণ করা শুরু হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

ইয়ারজানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টের রোগী। চলাফেরা করতে পারলেও কোনো কাজ করতে পারেন না। মা রেনু বেগমই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। অন্যের বাড়ি এবং ক্ষেত খামারে কাজ করে যা আয় করতেন তা দিয়েই চলত দুই মেয়েসহ চার জনের সংসার। ইয়ারজান বেগমের অসাধারণ নৈপুণ্যে ভারতের বিপক্ষে ৩-২ গোলে জয় পায় বাংলাদেশ। এই জয়ের পর থেকেই দেশের ফুটবল প্রেমীদের সঙ্গে আনন্দে ভাসছে ইয়ারজানের পরিবারসহ এলাকার মানুষ। তার পারিবারিক অবস্থা তুলে ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অনেকে আসছেন তার পরিবারের বাস্তব অবস্থা দেখতে। চেষ্টা করছেন সাধ্যমতো সহযোগিতা করার। ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসন, সদর উপজেলা প্রশাসন,র্ যাব-১৩'র পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তা দিয়েই মূলত চলছে তাদের সংসার।

ইয়ারজানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'আমি শ্বাসকষ্টের রোগী। কোনো কাজ করতে পারি না। ইয়ারজানের মায়ের সামান্য আয় দিয়েই আমাদের খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়। সরকারি কোনো সাহায্য সহযোগিতাও পাইনি। আমার ডানপিঠে মেয়েই কপাল খুলে দিয়েছে।'

মা রেনু বেগম বলেন, খেলার জন্য আমার মেয়ে ইয়ারজানকে কত মারপিট করেছি। অনেক বকাবকি করতাম, ভয় দেখাতাম। খেলতে যেতে নিষেধ করতাম। কিন্তু সে লুকিয়ে চলে যেত খেলতে। পরে যখন বুঝলাম সে ভালো খেলছে, তখন আর গালি দিতাম না। এখন সে বিদেশের মাটিতেও খেলে ভালো করেছে। আমরা খুব খুশি হয়েছি। ডিসি স্যার আমাদের বাড়ি করে দিচ্ছেন। আমার মেয়ে এখন ঢাকায়। সে যখন বাড়ি আসবে, দেখবে আমাদের আগের বাড়ি আর নাই। আমরা বসবাস করছি পাকা বাড়িতে। সে যে কি আনন্দ পাবে।'

সদর ইউএনও জাকির হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসকের উদ্যোগ ও নির্দেশনায় ইয়ারজানের পরিবারের জন্য দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি বাড়ি নির্মাণের কাজ চলছে। দ্রম্নত ঘর নির্মাণ শেষ করতে কাজ করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে