দুর্গাপুরে ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবন কাটছে প্রদীপের
প্রকাশ | ২৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
শেষ সম্বল বাবার ভিটা। সেখানেই পলিথিনে মোড়ানো ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস। কিন্তু ঘরের ভেতর রাত কাটানোর মতো নেই কোনো বিছানাপত্র। ঘুমাতে হয় ছনের বিছানায়। বৃষ্টি হলে সেই ঝুপড়ি ঘরে থাকা দুষ্কর। তবুও নিরুপায় হয়ে সেখানেই জীবন-যাপন করছেন ৭০ বছর বয়সি অসহায় বৃদ্ধ প্রদীপ কুমার সাহা।
নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর পৌর শহরের কুলস্নাগড়া এলাকায় বসবাস বৃদ্ধ প্রদীপ কুমার সাহার। প্রায় ৪০ বছর আগে মারা গেছেন তার বাবা। ১৫ বছর আগে মা। তিন বোন ও দুই ভাই ছিলেন তারা। বোনরা থাকেন শ্বশুরবাড়িতে, আরেক ভাই নিখোঁজ দীর্ঘদিন ধরেই। এক সময় তাদের অনেক জমিজমা ও এই ভিটাতেই বিশাল বাড়ি আর সুখের অভাব ছিল না। কিন্তু এখন বাবার ভিটা ছাড়া কিছুই নেই।
একটি বিদ্যালয় দেখাশোনা করতেন। এর বিনিময় তিনবেলা খেতে পারতেন। প্রায় বছরখানিক আগে সেখান থেকে বিদায় করে দিলে শুরু হয় মানবেতর জীবন। প্রদীপ কুমার করেননি বিয়ে। তাই জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তাকে দেখার কেউ নেই। মানুষের বাড়িতে গিয়ে হাত পেতে যা আনেন, তা দিয়েই দুঃখ-কষ্টে অতিবাহিত হচ্ছে তার জীবন। কখনো না খেয়েও দিন পার করতে হয় তার।
সরেজমিন গেলে পলিথিনের মোড়ানো ঝুপড়ি ঘরের ভেতর শুয়ে থাকতে দেখা যায় বৃদ্ধ প্রদীপ কুমার সাহাকে। তিনি বলেন, 'এই ঘরেই থাকি আমি। মানুষ যা দেয় খাই। ঘর পাইলে একটা ভালা হইতো।'
প্রতিবেশী ইরালাল রাজবর বলেন, প্রদীপ ধনী পরিবারের ছেলে ছিলেন। কিন্তু এখন আর কিছুই নেই। খুবই অসহায় জীবনযাপন করছেন। সামনে বর্ষায় ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে।
অপর প্রতিবেশী রীনা সাহা বলেন, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ের বারান্দায় থাকতেন। এরপর সেখান থেকেও তাড়িয়ে দিলে মাসখানিক আগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তার বাবার ভিটায় ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘর করে দেওয়া হয়। বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাই তার জন্য একটি ঘরের দাবি এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, 'আমি খোঁজ নিয়েছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'