জীবনযুদ্ধে আবারও দাঁড়ানোর চেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষিদের
ভেড়ামারায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ড
প্রকাশ | ২৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
ম ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ৫ হাজার পরিবারের স্বপ্নের পানের বরজসহ ৮ কিমি. এলাকাজুড়ে ফসলি জমি, জমির ফসল, বসতভিটা পুড়ে ছাই হয়েছে। উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা পাথরঘাট এলাকা, মিটননগর গ্রাম, আড়কান্দি গ্রাম, মাধবপুর গ্রাম, গোসাইপাড়া গ্রাম, মালিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। জীবনযুদ্ধে আবারও দাঁড়ানোর নিরন্তর চেষ্টা ৬টি গ্রামের কৃষকদের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ এখনো কাটেনি। আগুনের লেলিহান শিখায় চোখের সামনেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে স্বপ্ন। এমন অসহায় অবস্থায় ঘুরে দাঁড়ানোর পথ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। পোড়া ক্ষত থেকেই নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। মাটিতে পোড়া গন্ধ না শুকালেও জমি থেকে পুড়ে যাওয়া বাঁশ, পাটকাঠি আর ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিয়ে নতুন করে পান বরজ তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক।
কৃষক হাসান কলেন, 'আমার ৩ বিঘা জমিতে পান বরজ ছিল। খুব কষ্ট করে করেছিলাম। আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন নতুন করে করতে হলে অনেক টাকা প্রয়োজন। আমাদের এ অবস্থায় এনজিওগুলো ঋণ দিতেও নানা জটিলতা সৃষ্টি করছে।'
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মজিবর বলেন, 'আমার ৫ বিঘা জমিতে পানের বরজ ছিল। আগুনে সব কিছুই শেষ। পুড়ে যাওয়া পান বরজেই নতুন বীজ লাগানোর জন্য ড্রেন করছেন। আমার মতো বহু কৃষকই এখন নতুন করে পান বরজ তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।'
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, 'আপনারা ভেঙে পড়বেন না, মনোবল হারাবেন না। আপনাদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যা যা করণীয় তাই করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব।' এনজিও থেকে যারা লোন নিয়েছেন আগামী ৬ মাসে কোনো কিস্তির টাকার জন্য যেন চাপ প্রয়োগ না করে বিষয়টি দেখতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন তিনি। একই সঙ্গে বিনা সুদে ঋণ প্রদান করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যেন ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারে এজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিন বলেন, 'আমরা ৫০০ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে খাদ্যসামগ্রী, শাড়ি, লুঙ্গি ও দুই হাজার টাকা দিচ্ছি এবং আমি কথা দিচ্ছি আগামী ঈদের সামনে বাকি ৩৬৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের এমন সহায়তা প্রদান করব। পাশাপাশি এসব কৃষক যেন ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'
জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা বলেন, তারা কোনো ত্রাণ সহায়তা চান না। তারা চান বিনা সুদে ঋণ। ১ বিঘা পানের জমি প্রস্তুত করতে জমির খাজনাসহ প্রায় এক লাখ টাকা প্রয়োজন। এমন অবস্থায় সব ধরনের সহাযোগিতা করা হবে।
ভেড়ামারা ইউএনও আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, 'কৃষি ঋণের জন্য আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা কৃষি ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। ব্যাংক ও এনজিও সংস্থাগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঋণ প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।'