ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড রঘুনাথপুর গ্রামের জাফর হোসেন (৫৫) নামে এক বৃদ্ধকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে। জড়িতদের বিচার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী। পরিবারের সদস্যদের থানা হেফাজতে নিয়ে পুলিশি পাহারায় লাশ দাফন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দরবেশের হাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আরিফ হোসেন। নিহত জাফর সিন্দুরপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড রঘুনাথপুর গ্রামের শেখ মুজিব মেম্বার বাড়ির নুর মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় বাবুর্চি ছিলেন।
স্থানীয়রা জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে দীর্ঘদিন ধরে জাফর হোসেনকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা। সম্পত্তি লিখে নিতে নিয়মিত মারধর করা, অধিক পরিশ্রম করানো, উলঙ্গ করে রাখা, নষ্ট ও পচা খাবার দেওয়াসহ সব ধরনের নির্যাতন করতেন তারা। সবশেষ গত ১৮ মার্চ খাবারে বিষ প্রয়োগ করে তাকে হত্যার চেষ্টা করেন স্ত্রী ও তার বড় ছেলে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ফেনীতে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। দুদিন পর গত বুধবার রাতে তিনি মারা যান। ২১ মার্চ রাতে লাশ দাফন করার জন্য পারিবারিক কবরস্থানে নিয়ে গেলে স্থানীয়রা লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন। জাফরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে বিক্ষোভকারীরা স্ত্রী-সন্তানদের বিচার চান। পরবর্তীতে দরবেশেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আরিফ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং পুলিশি পাহারায় লাশ দাফন করা হয়।
নিহতের প্রতিবেশী নূর হোসেন মিয়া ও আব্দুল গোফরান জানান, পরিবারের প্রাত্যহিক নির্যাতনে জাফর হোসেন রোগাক্রান্ত ও হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাকে খাবারে বিষ প্রয়োগ করে কৌশলে তারা হত্যা করেছেন। এর বিচার হতে হবে। না হয় সমাজে একটি খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি হবে।
অভিযোগ অস্বীকার করে জাফরের বড় ছেলে জসিম উদ্দিন বলেছেন, 'পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে বাবা-মায়ের দ্বন্দ্ব ছিল। আমরা ভাই-বোনেরা চুপ থাকতাম। হতাশা থেকেই বাবা বিষপান করেছেন।'
দাগনভূঞা থানার ওসি আবুল হাশিম বলেন, এ ঘটনায় গত ২১ মার্চ একটি অপমৃতু্য মামলা (মামলা নং-০২) রুজু করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন আছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।