এখন কৃষকের গোলা ধানশূন্য। আর বাজারে দফায় দফায় বেড়ে চলেছে ধানের দাম। গত এক মাস হতে ধানের জেলা হিসেবে খ্যাত নওগাঁর নিয়ামতপুরে ধানের দাম বেড়েছে মণপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে দাম বাড়লেও এর সুফল পাচ্ছেন না কৃষকেরা।
শুক্রবার উপজেলার কয়েকটি আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রতি মণ স্বর্ণা-৫ জাতের ধান ১৩৩০ থেকে ১৩৭০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। আর প্রতি মণ ব্রি-৫১ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৩৪০ টাকায়। ধান মাড়াইয়ের পরপরই স্বর্ণা-৫ জাতের ধানের দাম ছিল ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকা আর ব্রি-৫১ জাতের ধানের দাম ছিল ১০২০ থেকে ১০৫০ টাকা।
একজন আড়তদার জানান, নিয়ামতপুরের কৃষকেরা আমন মৌসুমে স্বর্ণা-৫ আর ব্রি-৫১ জাতের ধান বেশি আবাদ করেন। ধান মাড়াইয়ের পরপরই তারা বেশির ভাগ ধান বিক্রি করে দেন। তারপর ধীরে ধীরে অবশিষ্ট ধান বিক্রি করেন। এখন আমন ধান কেনার মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। খুব কম কৃষকের গোলায় এখন ধান আছে। তাই দাম বাড়তি হলেও অল্প ধান আড়তে বিক্রির জন্য আসছে।
কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, কৃষকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ধান আবাদ করেন। কিন্তু যখন সেই ধান বিক্রি করতে যান, তখন দাম কম থাকে। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা মৌসুমের শুরুতেই কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে মজুত করতে থাকেন। এরপর কৃষকের ধান ফুরিয়ে গেলে ব্যবসায়ীরা বাড়তি দামে ধান বিক্রি করে মোটা অঙ্কের মুনাফা হাতিয়ে নেন।
কাপাস্টিয়া গ্রামের কৃষক বদি বলেন, এখন ধানের দাম বাড়লে তো কৃষকের কোনো লাভ নেই। ধান মাড়াইয়ের পরপরই সেচের দাম, সারের দাম, কীটনাশকের দাম, শ্রমিক খরচ, ধান উঠানোর খরচ এসব শোধ করতেই বেশিরভাগ ধান বিক্রি করে দিতে হয়। ধান উঠার সময়ে দাম বেশি পেলে ভালো হয়।
অন্য গ্রামের কৃষক কাশেম বলেন, 'আমি ৯ বিঘা জমিতে আবাদ করেছিলাম। সংসার খরচ মেটাতে ধান মাড়াইয়ের পরপরই অল্প দামে ধান বিক্রি করতে হয়েছে। এখন গোলা খালি হয়ে গেছে, দামও বাড়তি। বাড়তি দাম কৃষকের কোনো উপকারে লাগল না।'