ভাঙ্গায় বেগুন চাষে বেকারত্ব দূর
প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
বেগুন চাষে হাসি ফুটেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চাষি সম্রাট মাতুব্বরের মুখে। বিভিন্ন জাতের বেগুন চাষ করে তিনি এলাকায় বিপস্নব ঘটিয়েছেন। তার বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকেই তার পরামর্শ গ্রহণ করছেন। ভাঙ্গা পৌরসভার পূর্ব সদরদী গ্রামের বাস্তখোলা এলাকার বাসিন্দা সম্রাট প্রতিদিন কমপক্ষে দুই মণ বেগুন বিক্রি করে থাকেন। প্রতি কেজি বেগুনের মূল্য ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বিক্রির হিসাব অনুসারে তিনি প্রতিদিন ৩,২০০ টাকা থেকে ৪,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন।
ভাঙ্গা পৌর সদরের পূর্ব সদরদী গ্রামের বাস্তখোলা এলাকায় তার দুই বিঘা জায়গার উপর বেগুন ক্ষেত রয়েছে। তিনি সন্তানদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের সকল ব্যয় বেগুন বিক্রি করে এবং গরুর খামারের আয় থেকে করেন। বারী-১২, পারপাল কিং ও ভাঙ্গর নামে তিন ধরনের বেগুন চাষ করেন তিনি। বারী-১২ বেগুন লাউয়ের মতো দেখতে। তাই এ বেগুনের অন্য নাম লাউ বেগুন। এই বেগুন ১ কেজি থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত ওজনের হয়ে থাকে। পারপাল কিং বেগুনের রং বেগুনি। অন্যদিকে ভাঙ্গর বেগুন সবুজ রংয়ের। এগুলো ৫০০ গ্রাম থেকে ৭৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সম্রাট প্রায় দুই বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। প্রায় তিন হাজার বেগুন গাছে ঝুলছে বেগুন আর বেগুন। তিনি বলেন, প্রতিদিন ভাঙ্গা বাজারে দুই বেলায় তিনি দুই মণের বেশি বেগুন বিক্রি করে থাকেন। বারী-১২ জাতের বেগুনগুলো একশ' টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।
তিনি বলেন, 'আমার উৎপাদিত বেগুনের মধ্যে বারি-১২ জাতের বেগুনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। প্রতিদিন পাইকাররা এসে আমার ক্ষেত থেকে বেগুন নিয়ে যান। এছাড়া প্রতিদিন বিকালে ভাঙ্গা বাজারে এবং সকালে ভাঙ্গা আদালত পাড়া কাঁচা বাজারে বেগুন বিক্রি করে থাকি। ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিস আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করে।'
বেগুন চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, গোবর সার এবং জৈব সার মিশিয়ে আমি ক্ষেতে প্রয়োগ করি। তবে কিছু ইউরিয়া সারও দিয়ে থাকি। আমার নিজস্ব সেচ মেশিন রয়েছে। জৈব সার আমার গরুর খামার থেকে নিয়ে আসি। বেগুন উৎপাদনে খরচ খুব কম। মাঝে মধ্যে সার এবং কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া বেগুন চাষে তেমন কোনো খরচ নেই। সঠিক পরিচর্যা করলে বেগুন গাছে কমপক্ষে ৮ মাস ফলন ভালো পাওয়া যায়। গাছের বয়স এক বছরের বেশি হলে ফলন কমে যায়। তাই প্রতিবছর চারা উৎপাদন করে রোপণ করি।'
সম্রাট মাতুব্বর জানান, বেগুন চাষ করার কারণে আমার সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। আমি বেকার যুব সমাজকে বলি, তারা যেন আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা পালন করার জন্য এবং নিজেদের সচ্ছলতার জন্য এগিয়ে আসে।'
ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জীবাংশু দাস বলেন, বর্তমানে হাইব্রিড বেগুন বীজের মাধ্যমে অনেক কৃষক ব্যাপক উৎপাদন করছেন। হাইব্রিড বেগুনগুলোয় কোনো পোকা থাকে না। খেতেও সুস্বাদু। সম্রাট মাতুব্বরের মতো অনেকে আমাদের পরামর্শ নিয়ে বেগুন চাষ করে যাচ্ছেন। সাফল্যের মুখ দেখছেন তারা।