বরকলে অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃতু্য, আক্রান্ত ১৪

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

বরকল (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের ঠেগা চান্দবীঘাট নামক এলাকায় অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃতু্য হয়েছে। বর্তমানে অসুস্থ রয়েছে ১৪ জন। অজ্ঞাত রোগের প্রাদূর্ভাবে এলাকায় চরম আতংক বিরাজ করছে বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছে। ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার প্রীতিশংকর দেওয়ান ও গ্রাম প্রধান (কার্বারী) শীব রতন চাকমা বলেন, গ্রামে গত জানুয়ারি মাস থেকে এ অজ্ঞাত রোগ দেখা দেয়। অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত রোগীর শরীরে প্রথমে প্রচন্ড ব্যথা, জ্বর, এর পরে রক্ত বমি হয়। যেসব রোগী রক্ত বমি করেছে তারা মারা গেছে। তারা আরও জানান, গত জানুয়ারিতে ঠেগা চান্দবীঘাট গ্রামের বাসিন্দা লবিন্দর চাকমার ছেলে পত্ত রঞ্জন চাকমা (২৫) এ অজ্ঞাত রোগে মারা যান। এরপর ফেব্রম্নয়ারিতে একই গ্রামের পিদেইয়ে চাকমার ছেলে বিমলেশ্বর চাকমা (৫৫) ও মিলন শংকর চাকমার ছেলে ডালিম কুমার চাকমা (৩৫) চলতি মার্চ মাসে লবীন্দর চাকমার ছেলে চিত্তি মোহন চাকমা (৬০) ও ডালিম কুমার চাকমার মেয়ে সোনি চাকমা (৮) মারা যায়। মাত্র ১৭ দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের পিতা ডালিম কুমার চাকমা আর তার মেয়ে সোনি চাকমা মারা যায়। আর এ দিকে একই পরিবারের চিত্তি মোহন চাকমা আর পত্ত রঞ্জন চাকমা মারা যান বলে ওয়ার্ড মেম্বার প্রীতিশংকর দেওয়ান ও গ্রাম প্রধান শীব রতন চাকমা জানান। ঠেগা চান্দবীঘাট গ্রামে ৮৬ পাহাড়ী পরিবার রয়েছে। বর্তমানে ওই গ্রামবাসীর মনে চরম আতংক বিরাজ করছে। ঠেগা চান্দবীঘাট গ্রামের আশপাশে কোনো ক্লিনিক কিংবা চিকিৎসা সেবার কেন্দ্র নেই। অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত কিছু সংখ্যক রোগী গ্রামের বৈদ্য ও কবিরাজের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। আবার কেউ ঠেগা খুব্বাং বাজারে ব্র্যাকের স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জানা যায়, ঠেগা চান্দবীঘাট গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। নেই রিংওয়েল কিংবা টিউবওয়েল। কুয়া ও ছড়ার পানি পান করতে হয় গ্রামবাসীর। ফলে এ দূষিত পানি পান করার কারণে নানা রকমের রোগে আক্রান্ত হতে হয় দুর্গম অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের কর্মকর্তা ডা. মংখ্যসিং সাগর জানান, এ অজ্ঞাত রোগে আক্রান্তের ব্যাপারে তিনি জেনেছেন। ডা. কামরুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যর একটি মেডিকেল টিম ঠেগা চান্দবীঘাট গ্রামে পৌঁছাবে। এ অজ্ঞাত রোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ফুডপয়জনিং (খাদ্য বিষক্রিয়া) থেকে এ রোগ হতে পারে বলে তিনি প্রাথমিক ধারণা করছেন। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মং ক্যাসিং সাগরের নেতৃত্বে আরও একটি টিম ওখানে পৌঁছেছেন বলে জানা যায়। এ বিষয়ে ইউএনও ফোরকান অনুপম এলাহী জানান, উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে দু'টি মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও ওই এলাকাটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় ৪৫ বিজিবি কর্তৃক সার্বক্ষণিক সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে।