মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিবালয়ে অবৈধভাবে যমুনার বালু বিক্রি, ভাঙন আতঙ্ক

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ২২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
শিবালয়ে অবৈধভাবে যমুনার বালু বিক্রি, ভাঙন আতঙ্ক

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে যমুনা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার বালু কেটে অবাধে বিক্রি করছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। স্থানীয় এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে নদী থেকে অবৈধভাবে দিন-রাত এ বালু তুলে বিক্রি করছেন। যেন নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীরা প্রশাসনের ঊর্ধ্বে। প্রশাসন নীরব থাকায় যমুনা নদী থেকে অবাধে বালু বিক্রি করছেন প্রভাবশালীরা।

এদিকে নদী থেকে বালু তোলায় আশপাশের বাড়িঘর আগামী বর্ষা মৌসুমে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই সব এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আতঙ্কে রয়েছেন তারা। এ ব্যাপারে স্থানীয় এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি বলে দাবি তাদের।

স্থানীয়রা জানান, যমুনা নদীর তীর থেকে এভাবে বালু কেটে বিক্রি করায় হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা ও নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নদী তীরবর্তী এলাকার কয়েকজন জানান, উপজেলার যমুনা তীরের নিহালপুর, তেওতা, গান্দাইল, সাতুরিয়া ও জাফরগঞ্জ এলাকায় এ বালু কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বছরের পর বছর। বালু বিক্রি করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ১২-১৩ জন। নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু কেটে বিক্রি করলেও যেন দেখার কেউ নেই।

ওই এলাকার বাচ্চু শেখ, তাহের উদ্দিনসহ কয়েকজন জানান, গত কয়েক বছরে নদী তীরবর্তী এলাকার ৪-৫শ' বাড়িঘর যমুনার ভাঙনে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙন কবলিত মানুষ আরিচা-জাফরগঞ্জ বেড়িবাঁধের ওপর বসবাস করছেন। বাঁধটি দেওয়ার কারণে এলাকায় নদীভাঙন আনেকটা কমে গেছে। এখন নদী তীর থেকে বালু কেটে বিক্রি করায় বর্ষা মৌসুমে নদীর তীরবর্তী এলাকার ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বালু ব্যবসায়ীরা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পান না। এ ব্যাপারে স্থানীয় এলাকাবাসী প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু ব্যবসায়ী রুবেল ও রাকিব শেখ বলেন, 'অনেককে ম্যানেজ করে নদী থেকে বালু কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রশাসন আসলে বালু কাটা বন্ধ রাখতে হয়। প্রশাসন অভিযানে আসার আগেই আমরা অগ্রিম সংবাদ পেয়ে থাকি। এ কারণে আমাদের তেমন ঝামেলা হয় না। আমরা কয়েকজন সাংবাদিককেও কিছু টাকা মাসোহারা দেই।'

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেলাল হোসেন বলেন, উপজেলার যমুনা নদীর তীরবর্তী বালু অবৈধভাবে কেটে বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া মাঝেমধ্যে অভিযান করে অবৈধ ড্রেজার ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে