গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে লাবু মিয়া (৩৫) নামের এক ইরাকপ্রবাসীকে অপহরণের পর ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে অপহরণকারী দল। এ সময় প্রবাসীর কাছ থেকে বেশ কিছু মালামালও লুট করে নিয়ে যায় চক্রটি। পরে এ ঘটনায় প্রবাসীর ছোট ভাই মামুন মিয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিমকে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার হামুরদিয়া গ্রাম থেকে শিকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধারসহ লুট হওয়া মালামালের কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে অপহরণে জড়িত মো. দুলাল মিয়া (৩০), নাসির উদ্দিন (২৭) ও রাবেয়া (২১) নামের চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে একটি অপহরণ মামলা দায়েরের (নং-২০) পর গ্রেপ্তারকৃতদের গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার কালীগঞ্জ থানায় করা এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাতাব উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মশিউর রহমান খান, সাইফুল ইসলাম ও ফজলুর রহমান। কালীগঞ্জের গুহুলী গ্রামের আমিনুর রহমানের ছেলে লাবু দীর্ঘদিন ধরে ইরাকে থাকতেন। অন্যদিকে আটক দুলাল, নাসির ও রাবেয়া নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার হামুরদিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের সন্তান। তারা তিনজন সম্পর্কে ভাই-বোন।
ওসি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, গত ১৭ মার্চ ইরাক থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসেন। এ সময় হাসান মিয়া নামের তার এক সহকর্মী সেখান থেকে কিছু উপহার সামগ্রী কালীগঞ্জ বাজারে রাবেয়া নামে একজনকে দেওয়ার জন্য তার কাছে দেন। ভিকটিম লাবু মিয়া বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সরাসরি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপহার সামগ্রী পৌঁছে দিতে কালীগঞ্জ আরআরএন পাইলট স্কুল মাঠে রাবেয়ার কাছে আসেন। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে একটি কালো রঙের হাইয়েস গাড়িতে অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে নিয়ে রাবেয়া উপস্থিত হন। পরে তারা ভিকটিমকে জোরপূর্বক ওই গাড়িতে উঠিয়ে মালামালসহ তাকে অপহরণ করেন।
ওসি আরও বলেন, এরপর অপহরণকারীরা তার বাবার কাছে মোবাইল ফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা দিতে না পারলে ভিকটিমকে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।
ওসি মাহাতাব উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের ছোট ভাই বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি এজাহার দায়ের করে। সেই এজাহারের ভিত্তিতে থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) রাজীব হোসেন সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ প্রযুক্তি সহযোগিতায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ মার্চ রাত ৩টার দিকে ভিকটিম ইরাকপ্রবাসী লাবু মিয়াকে পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধারসহ ঘটনায় জড়িত দুলাল, নাসির ও রাবেয়াকে নরসিংদীর শিবপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া আসামিদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত মালামালের কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়। দুপুরে গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশাশি এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।