চার সন্তানের জননী রেহেনা বেগম (৩০)। গত ছয় মাস আগে তার স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতু্যবরণ করেছেন। নিজের বাবার পৈতৃক ও স্বামীর কোনো জমিজমা না থাকায় ধুনট সদরের দক্ষিণ অফিসারপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি। স্বামীর মৃতু্যর পর ছোট এক মেয়ে ও ছোট চার ছেলেকে নিয়েই চলে তার জীবন-সংগ্রাম। ছোট ছোট ছেলে-মেয়ের মুখে অন্ন তুলে দিতে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন রেহেনা। তার স্বামীর নাম উজ্জ্বল চাকলাদার।
রেহেনার এমন সংগ্রামী জীবনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান। রেহেনার প্রতিবেশী নিয়ামুল হাসান নামে এক ঠিকাদারের উদ্যোগে উপজেলা প্রকৌশল কর্মকর্তা মনিরুল সাজ রিজনের সহযোগিতায় তার হাতে সরকারি বরাদ্দের একটি সেলাই মেশিন তুলে দেন ইউএনও আশিক খান। এ দিকে সরকারি এই সেলাই মেশিন পেয়ে রঙ্গিন স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন বিধবা সংগ্রামী নারী রেহেনা বেগম।
ধুনট ইউএনও অফিস কক্ষে আবেগাপস্নুত হয়ে অশ্রম্নসিক্ত বিধবা রেহেনা বেগম বলেন, 'আমার স্বামীর মৃতু্যর পর ভাড়া বাসায় ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে নিয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছি। তবে এমন কষ্টের সময় সরকারি সাহায্য যেন রঙ্গিন স্বপ্নের মতো। এটা দিয়েই রোজগার করে সন্তানদের নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করব।'
তবে শুধু রেহেনা বেগমই নয়, তার মতো আরও ১৮ জন দুস্থ নারীকে স্বাবলম্বি করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ধুনট উপজেলা প্রকৌশল কর্মকর্তা মনিরুল সাজ রিজন বলেন, বর্তমান সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ধুনট উপজেলায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে সোমবার ১৮ জন দুস্থ নারীকে সেলাই মেশিন এবং ১০ জন দুস্থ কৃষককে স্প্রে মেশিন প্রদান করা হয়েছে।
ধুনট ইউএনও আশিন খান বলেন, বিধবা রেহেনা খাতুনের মতো অনেক নারীই সরকারি সাহায্যের জন্য আবেদন করেন। পরে যাছাই-বাছাই করে প্রকৃত ভুক্তভোগিদের সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করা হয়। তবে পরবর্তীতে বিধবা রেহেনা বেগমকে সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করা হবে।