বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে অস্থায়ী পুলিশি সেবা কেন্দ্র চালু

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
  ২০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে অস্থায়ী পুলিশি সেবা কেন্দ্র চালু

কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায় 'রাজিবপুরের চরে চরে, থানা এখন ঘরে ঘরে' এই প্রতিপাদ্যে রাজিবপুর থানাধীন কোদালকাটি ইউনিয়নে জনসাধারণের দ্বোরগোড়ায় আইনী সেবা পৌঁছে দিতে অস্থায়ী পুলিশ সেবা কেন্দ্র চালু করেছে রাজীবপুর থানা পুলিশ।

কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে যোগাযোগ বিছিন্ন নদী বৌধত কোদালকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে সপ্তাহে একদিন শনিবার সকাল-সন্ধ্যা থানার কার্যক্রম চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন রাজীবপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান। গণ দুই সপ্তাহ ধরে আইনী সেবা দিচ্ছেন এই থানা পুলিশ। ভোগান্তি ছাড়াই ঘরের পাশে এমন আইনী সেবা কেন্দ্র পেয়ে খুশি এখানকার মানুষ।

জানা যায়, রাজিবপুর উপজেলাটি কুড়িগ্রাম জেলার ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিছিন্ন একটি উপজেলা। ব্রহ্মপুত্রের করালগ্রাসে বিধ্বস্ত এ উপজেলার কোদালকাঠি ইউনিয়নটিতে ২৯টি গ্রামের প্রায় ৪৬ হাজার মানুষের বসবাস। ব্রহ্মপুত্রের জেগে ওঠা চরে এই গ্রামগুলোর অবস্থান, যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ফলে এ অঞ্চলের মানুষজনের ভোগান্তির শেষ নেই। পুলিশ কর্তৃক আইনী সেবা পেতে বন্যায় নৌকা ও খড়া মৌসুমে প্রায় ১৫ কি.মি. পায়ে হেঁটে আসতে হয় রাজীবপুর থানায়। অনেকে দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে থানায় আসেন না। ফলে ছোট-বড় অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলো প্রায় বৃহত্তর আকারে রূপ নেয়। এসব থেকে উত্তোরণে ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র চালু করেছে রাজীবপুর থানা পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর ইসলাম বলেন, 'আমার ভিটেমাটি নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ১০ বছর আগে। গত চার বছর আগে আবার চর জাগে। সেখানে আমার ৬ শতক জমি দখল করেছে প্রতিপক্ষ চাচাতো ভাই। আমি গরীব মানুষ, মামলা-মোকদ্দমা চালানোর সামর্থ নেই। অন্যের জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। এখানে থানার কার্যক্রমের খবর পেয়ে বিনা টাকায় একটি অভিযোগ দেই। পরে থানার ওসি বিষয়টি আমলে নিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করে দেয়। এখন জমি পেয়ে আমি খুবই খুশি।

স্থানীয় শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে কোদালকাটির মু এমন প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র পেয়ে আমরা অনেক খুশি।

কোদালকাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু বলেন, আমার ইউনিয়নের মানুষজনের সুবিধার্থে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র চালু করায় আমরা অনেক খুশি। এখানে পুলিশের এমন কার্যক্রম অব্যহত থাকুক।

রাজিবপুর থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, জেলার সবচেয়ে অবহেলিত ও দারিদ্র্য পীড়িত এ অঞ্চলের মানুষজন খুবই সহজ সরল। কোন দূর্ঘটনা হলে যোগাযোগ বিছিন্ন হওয়ায় এ ইউনিয়নের মানুষ থানায় আসতে চায় না। তাই সব কিছু বিবেচনা করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সপ্তাহে একদিন এখানে আইনী সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে