বাগেরহাটের পূর্ব-সুন্দবনের নোনা পানির কুমিরের পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে সুন্দরবনের ভেতরে নদীতে দুইটি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছে। কুমির বিশেষজ্ঞ শ্রীলঙ্কার ড. রু-সোমাওয়ারি ও অস্ট্রেলিয়ার ড. পাউল বৃহস্পতিবার রাতে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের কুমির 'জুলিয়েট' এবং যশোরের মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ির এলাকা থেকে উদ্ধার করা কুমির 'মধুর' শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার ডিভাইস বসিয়ে দেন। পরে গহিন সুন্দরবনের ভদ্রা নদীতে অবমুক্ত করা হয়। এ সময় বনবিভাগ ও আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এ কাজে সহযোগিতা করেন।
মোংলা বন্দর সংলগ্ন সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবীর জানান, কুমির দুটির পিঠে এ স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানোর মাধ্যমে উন্মুক্ত কুমিরের গতিবিধি, চলাচল ও এর আগে যেসব কুমির নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছে তাদের আচরণ, লবণ পানিতে টিকে থাকা এবং কুমিরের ডিম দেওয়া ছাড়াও তাদের বাচ্চা থেকে বংশবৃদ্ধি সংক্রান্ত তথ্য (সারভাইভাল রেট) জানা যাবে। এ দুই কুমিরের পাশাপাশি এক সপ্তাহের মধ্যে আরও তিনটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার ডিভাইস বসিয়ে বনের নদীতে অবমুক্ত করার কথা রয়েছে। স্যাটেলাইটের সময়সীমা আগামী দেড় বছর থাকবে। প্রতি আধঘণ্টা পরপর এর তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। তা থেকে নির্ধারণ করা হবে সুন্দরবনের মধ্যে বসবাস করা নোনা পানির কুমিরের তথ্য।
আজাদ কবির আরও জানান, কুমিরের পিঠে অস্ত্রপাচার করে বসানো স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার প্রথমে কিছুটা অস্বস্তিকর হলেও কিছুদিন যাওয়ার পর তা ঠিক হয়ে যাবে। স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার লাগানোর কিছুক্ষণ পর কুমির দুটি নিজ ইচ্ছায় নদীতে নেমে যায়।
শুরু থেকে এ কার্যক্রমের সময় উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ নুরুল করিম, সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, আইইউসিএনের কান্ট্রি ডিরেক্টর সরোয়ার আলম দীপু, মৎস্য বিশেষজ্ঞ মফিজুর রহমান, করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবীরসহ বন বিভাগের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।