বাসাইলে বেড়ে গেছে গরু চুরি দিশেহারা ক্ষুদ্র খামারিরা

প্রকাশ | ১৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

বাসাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের গোয়ালের গরু চুরির হিড়িক পড়েছে। রাতের আঁধারে সংঘবদ্ধ চোর গৃহস্তের বাড়িতে হানা দিয়ে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে তাদের সর্বস্ব। এ কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রান্তিক খামারি ও গৃহস্তরা। চোর ঠেকাতে রাতের আঁধারে পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছেন তারা। টাঙ্গাইলের পূর্বাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত বংশাই নদীর তীরবর্তী জনপদ বাসাইল উপজেলার নাইকানীবাড়ি, মিরিকপুর, হান্দুলিপাড়া, রাশড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিদের এখন রাত কাটছে নির্ঘুমে। বিভিন্ন বাড়ি থেকে রাতের বেলা চুরি হয়ে যাচ্ছে পালের গরু। কারও দুটি আবার কারও তিন-চারটি গরু চুরি হয়ে গেছে। অনেকের শেষ সম্বল দুধেল গাভী চুরি হওয়ায় পথে বসেছেন এসব খামারি। সম্প্রতি এলাকায় কমপক্ষে ৭টি বাড়িতে গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। খামারিরা বলছেন, এ ব্যাপারে পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না। গরু চুরি ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন এসব এলাকার খামারিরা। মিরিকপুর গ্রামের আব্দুর রহমান দুই বছর আগে মারা যান। সংসারের উপার্জন বন্ধ হয়ে গেলে তার স্ত্রী শুকুরি বেগম দুটি দুধেল গাভীর দুধ বিক্রি করে সংসার চালাতেন। তার গোয়াল থেকে রাতের আঁধারে ওই গাভীসহ আরও দুটি বখনা বাছুর চুরি হয়। এতে তার সংসারের উপার্জন একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। শুকুরি বেগম বলেন, 'এ নিয়ে থানায় অভিযোগ করেও কোনো ফল পাইনি।' একই এলাকার আব্দুল হালিম মিয়ার ছেলে বাচ্চু মিয়ার ৩টি গরু রাতে তার গোয়াল থেকে গরু চুরি হয়। গত ১০ ফেব্রম্নয়ারি রাতে নাইকানী বাড়ি গ্রামের তুলা মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়ার দুটি গরু চুরি হয়। সংসারের আয়ের উৎস ছিল এই গরুর দুধ বিক্রির টাকা। চুরি হওয়ার পর থানায় বিষয়টি জানিয়েছেন। নাইকানী বাড়ি গ্রামের আরেক ক্ষুদ্র খামারি আব্দুল করিমের চারটি গরু চুরি হয় গত ২০ ফ্রেব্রম্নয়ারি রাতে। হান্দুলি পাড়ার ইমরোজ আলী তালুকদারের দুটি, একই এলাকার ওয়াদ আলীর দুটি এবং রাশড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের দুটি গরু চুরি হয়েছে। এসব ক্ষদ্র খামারিদের সংসারের আয়ের উৎস ছিল এসব গরুর দুধ। দুধ বিক্রি করেই চলতো তাদের সংসার। বাসাইল সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহেল বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। পুলিশকেও বলেছেন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে। এ ছাড়াও এলাকার লোকজনকে সচেতন করতে উঠান বৈঠকসহ নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বাসাইল থানার ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, গরুচুরি রোধ করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। রাতে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। শিগগিরই এসব চোরকে আইনের আওতায় আনা হবে।