রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

ফকিরহাটে বাণিজ্যিকভাবে বারি-১২ বেগুন চাষে সাড়া ফেলেছেন কৃষক

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
  ১৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
বাগেরহাটের ফকিরহাটে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা বারি-১২ জাতের বেগুন ক্ষেত পরিদর্শনে কৃষি কর্মকর্তারা -যাযাদি

বাগেরহাটের ফকিরহাটে বাণিজ্যিকভাবে বারি-১২ জাতের বেগুন চাষে অন্য কৃষকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন কৃষক গৌরঙ্গ শীল। তিনি প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে এ জাতের বেগুন চাষে সফলতা অর্জন করেছেন। তার এই সাফল্য দেখে অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হচ্ছেন। আগামীতে ব্যাপকভাবে কৃষকরা এর চাষ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কৃষি কর্মকর্তারা।

ফকিরহাট কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে বারি বেগুন-১২ চাষ কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আকারে বড় ও খেতে সুস্বাদু এ বেগুন চাষে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ বছর ৫০ জন বাণিজ্যিকভাবে এই বেগুনের চাষ শুরু করেন। ইতোমধ্যে অনেক গাছে ফলন এসেছে। অন্য বেগুনের চেয়ে এ জাতের দামও বেশি। বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। একটি বেগুন প্রায় এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত হয়। উপজেলায় প্রায় একশ' বিঘা জমিতে কৃষকরা বেগুন চাষ করছেন। ফলন ভালো ও বেশি দাম পাওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে।

পিলজংগ বস্নকের কৃষক গৌরঙ্গ শীল জানান, ক্লাইমেট-স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় ৫০ শতক জমিতে এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে বারি-১২ বেগুন চাষ করেছেন। তিনি অন্য সবজি চাষের পাশাপাশি উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ও সহযোগিতায় বেগুন চাষ শুরু করেন। চারা লাগানোর তিন মাস পর থেকে তিনি এই বেগুন তোলা শুরু করেছেন। তার এই চাষ করতে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি প্রায় আড়াই লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান। আগামীতে বৃহৎ পরিসরে এই বেগুন চাষ করবেন।

এছাড়াও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে স্মল হোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস (সিসিএপি) এর আওতায় পিলজংগ বস্নকের কৃষক মোশারফ হোসেন, রজ্জব আলী, রফিকুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, রহিম গাজী, বাহিরদিয়া বস্নকের কৃষক মনির শেখ, জাহাঙ্গির শেখ, মোতালেব শেখ, বেতাগা বস্নকের অহিদ শেখ, জাকির শেখ, মাহমুদ শেখ, কমলেশ পাল, বিনয় দাস, রবিউল শেখ, মুকুল দাসসহ অনেক কৃষক বাণিজ্যিকভাবে এ বছর বারি-১২ বেগুন চাষ করে লাভবান হয়েছেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপুল পাল জানান, এসব কৃষকের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়েছে। বারী-১২ জাতের বেগুন চাষ লাভজনক। ভালো দাম ও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হওয়ায় অন্য কৃষকরাও এ বেগুন চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, উপজেলায় এই প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা এর চাষ করছেন। আকারে বড় এবং বাজারে চাহিদা থাকায় দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের এর চাষে আগ্রহ বাড়ছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের নানা পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা করছে। পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে এই বেগুনের চাষ শুরু করেন কৃষকরা।

বাগেরহাট খামারবাড়ি কৃষি অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুলাহ আল-মামুন বলেন, ফকিরহাটে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বারি-১২ বেগুনের চাষ হচ্ছে। পিলজংগ বস্নকের কৃষক গৌরঙ্গ শীল ক্লাইমেট-স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় এর চাষ করছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সব প্রকার সহযোগিতা করছে। উপজেলার অন্য প্রকল্পের আওতায় অনেক কৃষক বেগুনের চাষ করছেন। তিনি বলেন, প্রতিটি গাছে ৭ থেকে ৮ কেজি বেগুন হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, কৃষিতে আমাদের অভাবনীয় সাফল্য রয়েছে। কৃষিকে আরও বেগবান করতে হলে সবার প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি। এ বছর অনেক কৃষক বাণিজ্যিকভাবে বারি-১২ জাতের বেগুনের চাষ করেছেন। বাজারে এই বেগুনের চাহিদা রয়েছে। কৃষকরা বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ কৃষকদের নানাভাবে সহযোগিতা করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে