রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

প্রশাসনের আদেশ উপেক্ষিত গাংনীতে কসাইদের হাতে মাংসের দর নিয়ন্ত্রণ!

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
  ১৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
প্রশাসনের আদেশ উপেক্ষিত গাংনীতে কসাইদের হাতে মাংসের দর নিয়ন্ত্রণ!

মেহেরপুরের গাংনীতে বেড়েই চলেছে মাংসের দাম। গরু-খাসির মাংসের পাশাপাশি মুরগির দামও বেড়েছে। গেল এক সপ্তাহে কেজিতে গরুর মাংস ৫০ টাকা, খাসি ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা প্রশাসনের বেধে দেওয়া দর উপেক্ষা করে মাংস বিক্রেতারা ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করে বিক্রি করছেন। তবে প্রশাসন বলছে বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বাজার পর্যবেক্ষণ শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা গেছে, ছয় মাস আগে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে গরুর মাংসের দাম কেজিপ্রতি ৭০০ টাকা ও খাসির মাংস ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যদিও এ দর নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। রমজানের এক সপ্তাহ আগে থেকেই নির্ধারিত দরের চেয়ে হঠাৎ দর বৃদ্ধি শুরু হয় মাংসের বাজারে। বিশেষ করে গরুর মাংস ৬৫০ টাকা থেকে এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ৭৫০ টাকা। একইসঙ্গে পালস্না দিয়ে বেড়েছে খাসির মাংসের দাম। ৯০০ টাকা থেকে বেড়ে এখন তা এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে সোনালি ৩২০ টাকা, ব্রয়লার ২২০ টাকা ও লেয়ার মুরগির দর কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৩৪০ টাকা কেজি দরে দরে বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে দেশি মুরগির দর কেজিতে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বুধবার সকালে গাংনী বাজারে মাংস কিনতে আসা শিশিরপাড়া গ্রামের শিক্ষক মতিয়ার রহমান জানান, প্রশাসন বাজার দর নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও তা মানা হয় না। কসাইরা তো প্রশাসনকে ভয় পায় না। প্রশাসন কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না তার কারণ অদৃশ্য। তাহলে সাধারণ ক্রেতারা প্রতিবাদ কিভাবে করবে পরিবারের জন্য প্রয়োজন তাই বাধ্য হিয়ে কিছু মাংস কিনতে হচ্ছে।

ক্রেতা জামিল জানান, গেল এক বছরে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৩০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজিতে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে অল্প আয়ের মানুষের কাছে গরু ও খাসির মাংস খাওয়া অনেকটাই স্বপ্নের মতই মনে হয়।

গাংনী বাজারের কসাই জাহাঙ্গীর আলম জানান, শবেবরাত থেকে গরুর দাম বেড়েছে। আগে যেখানে আনুমানিক হিসেবে ৭০০ টাকা কেজি দরে গরু কেনা যেত এখন সেখানে ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে ৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা কেন করা হচ্ছে- এমন প্রশ্নে জবাবে কসাইরা জানান, বিষয়টি প্রশাসনে জানানো হবে।

অভিযোগ রয়েছে, জেলা শহরসহ বিভিন্ন হাট বাজারের মাংস বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছামতো দর বৃদ্ধি করে মাংস বিক্রি করছেন। রোগা ও অস্বাভাবিক পশু জবাই করেও সেই চড়া দরেই বিক্রি করছেন কসাইরা। ক্রেতাদের প্রতিবাদে কোনো কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়েই বাড়তি দরে কিনতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় মাংস। তবে এখন পর্যন্ত জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা জানান, ইতোমধ্যে পৌর মেয়রসহ অন্যান্য প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বাজার পর্যবেক্ষণ শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে