তিন জেলায় তিন লাশ উদ্ধার

দৌলতখানে কলেজ শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৩

প্রকাশ | ১৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
ভোলার দৌলতখানে কলেজ শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে, পাবনা, শেরপুরের নকলা ও নেত্রকোনার কেন্দুয়া থেকে আরও তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর- স্টাফ রিপোর্টার, ভোলা ও দৌলতপুর প্রতিনিধি জানান, ভোলার দৌলতখানে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আসিফ (১৮) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কুপিয়ে আহত করা হয় আরও পাঁচজনকে। নিহত আসিফ উপজেলার চরখলিফা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. বাবুলের ছেলে। আহতরা হলেন দুলাল, রাসেল, বাবু, আমজাদ ও মিরাজ। এদের প্রত্যেকের বাড়ি চরখলিফা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে ওই ইউনিয়নের কদমতলা এলাকার নুরু মিয়ার দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার আসিফের বাবা মো. বাবুল বাদী হয়ে ৭ জনকে চিহ্নিত ও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি কবির (২৭), তার বাবা ছালেম (৬০) ও মা ফিরোজা বেগমকে (৫০) আটক করেছে। জানা গেছে, আহত রাসেল ও তার বন্ধু নিহাদকে নিয়ে সন্ধ্যার দিকে ঝালমুড়ি খেতে বাড়ির পাশের নুরে আলমের দোকানে যান। সেখানে সুবর্ণা (১৬) নামে একটি মেয়ে দাঁড়ানো ছিল। তখন রাসেল তার বন্ধু নিহাদকে বলেন, 'বন্ধু কালকে থেকে রোজা গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে দেখা করতে পারবি না। দেখা করতে তো টাকা খরচ হবে, সেই টাকা দিয়ে ঝালমুড়ি খাওয়া।' এই কথা শুনে সেখানে থাকা মেয়েটি ছেলেগুলোকে অসভ্য বলে বাড়ি চলে যায়। বাড়ি গিয়ে সুবর্ণা তার ভাই ফাহাদকে বিষয়টি জানালে, ফাহাদ এসে সেখানে থাকা রাসেল ও নিহাদসহ পাঁচজনকে স্থানীয় জাইলস্না বাড়ির দরজায় পেয়ে তাড়া করে। পরে সুপারি বাগানের ভেতরে গিয়ে ফাহাদ এসএস পাইপ দিয়ে রাসেলের পায়ে আঘাত করে। পরবর্তীতে ফাহাদ তার ভাই কবির, বন্ধু শামিমসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে খবর দিলে তারা রামদা এবং লাঠিসোটা নিয়ে আসে। একপর্যায়ে আসিফসহ সেখানে থাকা আরও চারজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আসিফকে মৃত ঘোষণা করেন। ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন আসাদুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় নিয়মিত মামলার পর তিনজকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ চলমান রয়েছে। পাবনা প্রতিনিধি জানান, পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়ায় বাড়ি থেকে নিখোঁজের তিনদিন পর মো. আজাদ (২১) নামের এক যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে উপজেলার দাপুনিয়ান ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামে মোশাররফ চেয়ারম্যানের প্রজেক্টের পেছন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত আজাদ দাপুনিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। পেশায় রাজমিস্ত্রি আজাদ গত সোমবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ-প্রশাসন) মাসুদ আলম বলেন, 'গত ১১ তারিখ থেকে আজাদ নিখোঁজ ছিলেন। এ বিষয়ে থানায় জিডিও করা আছে। বুধবার দুপুরে আজাদের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। তবে তার সঙ্গে থাকা একটি মোটর সাইকেল ও মোবাইল পাওয়া যায়নি। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে। নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি জানান, শেরপুরের নকলায় আছাদ মিয়া (১৭) নামে অটোচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত অনুমান ৩টার দিকে উপজেলার নকলা ইউনিয়নের ছেপাকুড়ি ব্রিজের পূর্ব দিকের রাস্তার ধান ক্ষেতের পাশে মাটিচাপা থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি উপজেলার দক্ষিণ নকলার এলাকার ফজলুল হকের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন গনপদ্দি ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে হামিদুল ইসলাম খোকন (২৪), পূর্ব গজারিয়ার আবু হানিফের ছেলে নূরনবী (২১), পৌরশহরের ইশিবপুর এলাকার চান মিয়ার ছেলে মিলন মিয়া মিনাল (২৪), নকলা ইউনিয়নের ধনাকুশা এলাকার মৃত আশকর আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম জাহিদ (২২)। জানা যায়, প্রতিদিনের মতো গত সোমবার আছাদ মিয়ার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হন। সেদিন আর বাড়ি ফেরেননি আসাদ। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গাতে খোঁজাখুজি শুরু করেন। পরে জানতে পারেন নালিতাবাড়ীতে অটোরিকশাসহ দু'জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ রাতেই তদন্তে নামে এবং আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা আসাদ নামে এক অটোরিকশা চালককে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে অটোরিকশাটি নিয়ে যায়। তাদের তথ্যমতে নকলার ছেপাকুড়ি ব্রিজের পাশে ধানক্ষেত থেকে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থা আছাদের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে আরও দু'জনকে আটক করেছে। কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় বিজয় বর্মণ (২০) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দেওপাড়া গ্রামে এক পুকুর থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়। বিজয় বর্মণ বৈরাটি গ্রামের ইতিন বর্মণের ছেলে। জানা যায়, গত রোববার থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। রাতে দেওপাড়া গ্রামের বকুল মিয়ার বাড়ির পেছনের পুকুরে বিজয় বর্মণের লাশ দেখতে পান স্থানীয় এক কৃষক। পরে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ওসি এনামুল হক জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।