সৈকতে 'গান গাওয়া' শিশু জান্নাতের পাশে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো সঞ্চয়পত্রের কাগজপত্র ক্ষুদে শিক্ষার্থী নুরে জান্নাতের পরিবারকে তুলে দেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শহীন ইমরান -যাযাদি
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নুরে জান্নাত। কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ ঘোনারপাড়া এলাকার বসবাসকারী হতদরিদ্র, নিঃস্ব ও সহায়সম্বলহীন জান্নাতের বাবা পঙ্গু মুহাম্মদ ইসলাম আর মা গৃহিণী এক বোন, দুই ভাইসহ পাঁচজনের পরিবার। অভাবের তাড়নায় তাদের সংসারে হাল ধরতে কক্সবাজার সৈকতে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের গান শোনায় শিশু জান্নাত। তার গান শুনে পর্যটকেরা সন্তুষ্ট হয়ে বিনিময়ে দেন পারিশ্রমিক। আর তা নিয়ে কোনো মতে চলে এই ক্ষুদে শিক্ষার্থী জান্নাতের পরিবার। বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন আগে একটি বেসরকারি সংবাদভিত্তিক টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রচার হয়। খবরটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানার পর শিশু জান্নাতের পাশে দাঁড়ান। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে শিশু জান্নাতকে দেওয়া হয় ১০ লাখ টাকা। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শহীন ইমরান মঙ্গলবার জান্নাতের পরিবারটির হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ লাখ টাকার সঞ্চপত্রের কাগজপত্র হস্তান্তর করেন। জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শহীন ইমরান জানান, কিছুদিন আগে একটি সংবাদ ভিত্তিক টেলিভিশনে শিশু জান্নাতকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসলে তিনি বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়ার নিদের্শ দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো ১০ লাখ টাকার সঞ্চয় পত্রের কাগজপত্র নুরে জান্নাতের পরিবারের কাছে মঙ্গলবার হস্তান্তর করা হয়। তিনি আরও জানান, নুরে জান্নাতের পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘরও ইতোমধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঘরের কাজ শেষ হলে তারা সেখানে থাকতে পারবে। নুরে জান্নাতের বাবা মুহাম্মদ ইসলাম বলেন, 'ছেলেমেয়ে নিয়ে কষ্টের সংসারে প্রধানমন্ত্রী আমার মেয়ের খবর জানতে পেরে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, সেজন্য আলস্নাহর কাছে দোয়া করি সব সময়। আমার কষ্টের সংসারে এখন সুখের হাসি ফুটেছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর কারণে। পঙ্গুত্বের কারণে ভারি কোনো কাজও করতে পারি না। দিনমজুরি কাজ করতে গিয়ে তিন বছর আগের একটি দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে পড়ি। এখন ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার চেষ্ট করব।' নুরে জান্নাত জানায়, 'আমার খুব ইচ্ছে লেখাপড়া করার। বাবার কোনো টাকা নেই এবং কাজও করতে পারে না। তাই আমি পড়ালেখার পাশাপাশি সাগর পাড়ে পর্যটকদের গান শোনাই। তারা আমার শুনে কিছু টাকা-পয়সা দেয়। গান করি বলে সামান্য কিছু খেতে পারি আমরা। জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী আমাকে সাহায্য করেন। আমি এখন খুব খুশি। সবাই আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।' কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খিসা বলেন, এর আগে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তার পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা ও নুরের পড়ালেখার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়। সে যাতে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে তার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।