শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

টাঙ্গাইলে অদক্ষ চালকদের হাতে গাড়ি, মৃতু্যঝুঁকিতে এসি ল্যান্ডরা

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  ১৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
টাঙ্গাইলে অদক্ষ চালকদের হাতে গাড়ি, মৃতু্যঝুঁকিতে এসি ল্যান্ডরা

টাঙ্গাইলে সম্প্রতি প্রত্যেক উপজেলার সহকারী ভূমি কমিশনারদের (এসি ল্যান্ড) জন্য চালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে নিয়োগকৃত চালকদের অভিজ্ঞতা না থাকায় যোগদানের পর থেকেই গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসি ল্যান্ডদের গাড়িগুলো।

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ৩ মার্চ ৯ জন নতুন চালককে স্ব স্ব উপজেলার এসি ল্যান্ড কার্যালয়ে যোগদানের জন্য অফিস আদেশ দেওয়া হয়। ওই অফিস আদেশে স্বাক্ষর করেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. ওলিউজ্জামান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩ মার্চ যোগদানের পরই জেলার ভূঞাপুর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, বাসাইল, কালিহাতী ও ঘাটাইল উপজেলার এসি ল্যান্ডের গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। এতে গাড়িগুলোর লুকিং গস্নাস ও ব্যাক লাইট ভেঙেছে এবং গাড়ির বডি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে নাগরপুরে এসি ল্যান্ডের গাড়ি উপজেলার মাহমুদনগর এলাকার ফাজিল মাদ্রাসার সামনে একটি মোটর সাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই আরোহী গুরুতর আহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার পর থেকেই ওইসব চালকদের প্রশিক্ষণের জন্য এক সপ্তাহের ছুটি দেওয়া হয়েছে। আবার কোনো উপজেলার চালকরা এসি ল্যান্ডের গাড়ি নিয়ে মাঠে পথে ট্রেনিং করছে অন্য চালকদের সহায়তায়। নতুন চালকদের অদক্ষতার কারণে মৃতু্যঝুঁকিতে রয়েছেন কর্মকর্তারা। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

নাগরপুর এসি ল্যান্ডের গাড়ির চালক আলি জোবায়ের বলেন, যোগদানের পর দুইবার দুর্ঘটনা ঘটেছিল। একবার গাড়ি ঢালু থেকে নামার সময় ব্যাক লাইট ক্ষতি হয় এবং পরের দিন একটা মোটর সাইকেলের সঙ্গে লাগে। এতে কেউ তেমন আহত হয়নি। সাধারণ মানুষ নিয়ে গাড়ি চালানো আর ম্যাজিস্ট্রেট বা কর্মকর্তাদের নিয়ে গাড়ি চালানোটা একটু কঠিন। নিয়োগের পর প্রশিক্ষণের দরকার ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালে টাঙ্গাইল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) থেকে চার মাসের কোর্স করেন। এরপর আর প্রফেশনালভাবে চালানো হয়নি। পরে ওই বছরেই বিআরটিএ থেকে লাইট/মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স পান।

বাসাইল এসি ল্যান্ডের গাড়ির নিয়োগ পাওয়া নতুন চালক বলেন, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণের কোনো সার্টিফিকেট নেই। গত বছর জেলা বিআরটিএতে পরীক্ষা দিয়ে লাইসেন্স পেয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার বাসাইলের কোর্ট মাঠে এসি ল্যান্ডের গাড়ি দিয়ে ইউএনও'র গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সঙ্গে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ছিল।

ভূঞাপুর এসি ল্যান্ডের গাড়ির নতুন চালক সবুজ মিয়ার পরিবর্তে সাদিকুল ইসলাম নামের একজন চালককে ভাড়া করা হয়েছে। ওই সাদিকুলই গত ৪ মার্চ হতে এসি ল্যান্ডের গাড়ি চালাচ্ছেন।

ভাড়াটিয়া চালক সাদিকুল ইসলাম বলেন, নতুন চালক সবুজ মিয়ার গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা নেই। তাই তাকে দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছে। এর পাশাপাশি ওই নতুন চালক তার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।

ভূঞাপুর এসি ল্যান্ড ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, নতুন চালক তেমন দক্ষ না। গাড়ি একটু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ওই চালক রাস্তাঘাটও তেমন চেনে না। তাই তার সঙ্গে একজন চালককে রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওলিউজ্জামান বলেন, নিয়োগ শর্তাবলিতে অভিজ্ঞতার বিষয়টি ছিল না। তারপরও নিয়োগ পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছে শুধুমাত্র তাদেরই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে নিয়োগকৃতরা অভিজ্ঞ না। কয়েকটি উপজেলায় এমন হচ্ছে বিধায় বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে