দুই জেলায় দুই লাশ উদ্ধার

পাবনায় ক্যানসারে মেয়ের মৃতু্য সংবাদ শুনে মারা গেলেন মা

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
পাবনায় ক্যানসারে মেয়ের মৃতু্য, সংবাদ শুনে মারা গেলেন মা। এদিকে, গাইবান্ধায় নিখোঁজের তিনদিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে যুবকের এবং দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ভাঙারি ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট- পাবনা প্রতিনিধি জানান, পাবনার আটঘরিয়ায় ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মেয়ে আমেনা খাতুনের মৃতু্য হয়েছে। আর মেয়ের মৃতু্য সংবাদ শুনে মারা গেছেন মা। গত সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নের পাটেশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন- পাটেশ্বর গ্রামের আলেম মোলস্নার মেয়ে আমেনা খাতুন (৩৫) ও তার স্ত্রী ইসমত আরা (৫৫)। স্থানীয়রা জানায়, মেয়ে আমেনা খাতুন দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। গত কয়েকদিন আগে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে মৃতু্য হয় আমেনার। ওই খবর শোনার পর মা ইসমত আরা স্ট্রোক করেন। তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় তিনিও মারা যান। এ বিষয়ে দেবোত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাঈম্মীন হোসাইন চঞ্চল বলেন, 'একই দিনে মর্মান্তিক এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমরা যতটুকু পারি পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।' আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাদিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি হৃদয়বিদারক। গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, গাইবান্ধায় নিখোঁজের তিনদিন পর সদর উপজেলার বলস্নমঝাড় ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের একটি পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংক থেকে মঙ্গলবার সকালে শফিকুর রহমান পাভেল আকন্দ (৩৮) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পাভেল আকন্দ ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ আকন্দের ছোট ছেলে। পুলিশ জানায়, পাভেল গত শনিবার সন্ধ্যায় বলস্নমঝাড় ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পাভেল আকন্দের বড়ভাই বেলাল ইউসুফ রাসেল বাদী হয়ে পরদিন রোববার গাইবান্ধা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। মঙ্গলবার সকালে বলস্নমঝাড় ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে পাভেল আকন্দের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা জানান, নিখোঁজ পাভেল আকন্দের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে মেনহাজুল ইসলাম (৫০) নামে এক ফেরিওয়ালা ভাঙারি ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত সোমবার সকালে উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের আমডুঙ্গিহাট-রাঙ্গামাটি সড়কের ফুলবাড়ী কোল্ড স্টোরেজেরর কাছে মৎস্যপাড়া গ্রামের মাঝামাঝি ডারকি ডোবা কালভার্টের ওপর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ফুলবাড়ী সার্কেল) মো. ফরহাদ হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোস্তাফিজার রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহত মেনহাজুল ইসলাম ফুলবাড়ী পৌর এলাকার পশ্চিম গৌরপাড়া গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে। তিনি পেশায় একজন ভাঙারি ব্যবসায়ী ছিলেন। পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে স্থানীয়রা উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের আমডুঙ্গিহাট-রাঙ্গামাটি সড়কের ফুলবাড়ী কোল্ড স্টোরেজ সন্নিকটে মৎস্যপাড়া গ্রামের মাঝামাঝি ডারকি ডোবা কালভার্টের ওপর মারদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে জানায়। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মরদেহের ছবি ছড়িয়ে পড়লে স্বজনরা তা দেখে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিচয় শনাক্ত করে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। মেনহাজুলের স্ত্রী ফুলো বানু জানান, মেনহাজুল প্রতিদিনের মতো গত রোববার দুপুরের খাবার খেয়ে, ভঙারি সংগ্রহ করতে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর ফেরেননি। তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাননি। পরদিন সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মেনহাজুলের দেখলে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেন। ফুলবাড়ী থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, সকালে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মৃতু্যর রহস্য উদ্ঘাটনে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারে সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।